অঙ্গনওয়ারী সেন্টারে আস্তানা গেড়েছে স্থানীয় ছাগল

কচি কাঁচাদের জন্যে নির্মিত অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ছাগলের আড্ডা খানা। শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই ?
এমনই ঘটনার সাক্ষী রাজ্যের এক অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র ও তার আশপাশের এলাকাবাসী। ডঃ মানিক সাহার দায়িত্বে থাকা শিক্ষা দপ্তরের অঙ্গীভূত প্রাক প্রাথমিক স্তরের এই হাল হকিকত দেখে শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মহল ও যেন লজ্জায় মলিন। কথা হচ্ছে সোনামুড়া মহকুমাধীন এক অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র কে ঘিরে।

অঙ্গনওয়ারী সেন্টারে আস্তানা গেড়েছে স্থানীয় ছাগল
অঙ্গনওয়ারী সেন্টারে আস্তানা গেড়েছে স্থানীয় ছাগল

অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের এক কর্মীর দায়সারা কার্যকলাপের ফলেই নাকি এই অবস্থা। যার বিবরন দিতে গিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এলাকাবাসীরা। জানা গেছে সোনামুড়া মহকুমার অন্তর্গত কালাপানিয়া অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে রয়েছেন এক দায়িত্ব জ্ঞান হীন কর্মী। যার দায়সারা কার্যকলাপ বেশ কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করছিল স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়া যায় এই সেন্টারে যেতেই।
ওই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের কর্মী তাজ বাহার বেগম । তিনি প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালেও অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে আসেন । কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের সমস্ত কাজ শেষে তাজ বাহার বেগম বেড়িয়ে যান অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের দরজায় তালা না লাগিয়েই । দরজা খোলা রেখেই দিব্যি বাড়িতে চলে যান তাজ বাহার। আর অমনি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার খোলা অবস্থায় দেখতে পেয়েই তাতে আশ্রয় নিতে ঢুকে পরে ছাগলের দল । উল্লেখ্য এদিন সকাল থেকেই ছিল ধুন্দুমার বৃষ্টি। স্বাভাবিক অর্থেই পশু প্রাণীরাও একটা ছাউনির আশায় এদিক উদিক তাকিয়ে বেরায়। একই ভাবে হয়তো এই ছাগল গুলো ও আশ্রয় খুঁজতে গিয়ে দেখতে পায় গোটা অঙ্গনওয়ারীর ঘর টাই ফাঁকা রয়েছে। সেই দেখেই তাতে ঢুকে পরে এরা। এদের আর দোষ কি ? আসল দোষ তো হচ্ছে সেই তাজ বাহার বেগমের। যিনি মাস শেষে গুনে গুনে মাইনে টা তো ঠিক বুঝে নিয়ে যান, কিন্তু কাজের বেলায় অষ্টরম্ভার ভুমিকাতেই অবতীর্ণ উনি দীর্ঘকাল যাবত।
উল্লখ যোগ্য বিষয়, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার। তার ভেতরে শিশুদের খাবারের চাল ডাল সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী থাকে। এমনকি প্রয়োজনীয় বহু সরকারি কাগজপত্র থাকে। কিন্তু সেগুলির কথা চিন্তা না করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী তাজ বাহার বেগম সেন্টারের দরজা খোলা রেখেই বাড়িতে চলে গেলেন। কেন ? এতো কিসের তাড়া ? নাকি অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই তাই এমন দায়সারা ভাব।
আর এদিকে এলাকার কিছু ছাগল অঙ্গনারী সেন্টারের ভেতরে প্রবেশ করে মলমূত্র ত্যাগ করছে। যার ফলে পরদিন যে শিশুরা এসে আবার সেখানে বসে পড়াশুনা করবে সেই পরিবেশ টুকু ও বজায় থাকছে না। আপনিই ভাবুন একবার, আপনি বাড়ি থেকে বাইরে কোথাও কাজে গেলেন। বাড়ি ফিরে দেখলেন আপনার ঘরের মেঝেতে , সোফায়, টেবিলে, চেয়ারে সর্বত্র মল ও মূত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কেমন অবস্থা হবে আপনার ? অন্যের পরিস্থিতি টা এভাবেই কল্পনা করে দেখুন । তাহলে বুঝবেন পরিস্থিতি টা কতটা গম্ভীর।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এইভাবে অঙ্গনারী সেন্টার খোলা থাকলে যেকোনো সময় চুরির ঘটনাও সংঘটিত হতে পারে। আজকাল এমনিতেই রাজ্যের চোরের উপদ্রব অনেকটাই বেশি। এতে বোঝা যাচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার এর ভেতরের এই সমস্ত সরকারি সম্পত্তির জন্য কোন চিন্তা নেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী তাজ বাহার বেগমের। তাছার এধরণের আচরনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিও বিরূপ দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠছে এটাও একেবারেই স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় এলাকাবাসীরা এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ততসঙ্গে এই কর্মীর বিরুদ্ধে জরুরী পদক্ষেপ নেবার ও দাবী তোলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের এতো বড় বড় ইস্যু ফেলে কি আর মন্ত্রী বাহাদুরের সময় হবে এই সামান্য অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের দিকে নজর দেওয়ার , সেটাই প্রশ্ন !

Leave A Reply