BJP party office attacked in Khumulug
মথার ছোবলে ছবি হয়ে গেল খুমুলুং বিজেপি, টু শব্দ করলেই আবার আক্রমণ
মথার ছোবলে ছবি হয়ে গেল খুমুলুং বিজেপি। ধীরে ধীরে ঘুন পোকার মতোই কুড়ে কুড়ে বিজেপি কে শেষ করে দিচ্ছে তাঁরই শরিক তিপ্রা মথা। ক্ষমতাশিন দল হয়েও তিপ্রা মথার আক্রমনে বোকা বলে গেল গেরুয়া শিবির । মথার আঘাতে খুমুলুং বিজেপির শ্বাস রুদ্ধ, এমনটাই অভিযোগ। তবে কি মন্ত্রী বাবুর বক্তব্য অনুযায়ী এটাই কর্ম ফল ?
দেওয়াল থেকে পুরনো জীর্ণ রঙ যেভাবে খসে পরে , ঠিক সেভাবেই যেন বিজেপির প্রতি তিপ্রা মথার ভালোবাসার কৃত্রিম প্রলেপ ক্রমশই খসে খসে পড়ছে। আর তাতে করে দিন দিন নিজের আসল রূপ মেলে ধরছে তিপ্রা মথা। যে তিপ্রা মথা কে শক্তি করে রাজ্যে দ্বিতীয় টার্মের সরকার গড়েছে বিজেপি দল সেই শরিক মথাই এবার পিঠে ছুরি মারার কাজ করছে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মহারাজা প্রদ্যুত মানিক্যের তিপ্রা ল্যান্ড এর প্রতিশ্রুতি যখন ত্রিপাক্ষিন চুক্তির আড়ালে ম্লান হয়ে যায় তখনই সুযোগ বুঝে বহু তিপ্রা মথা সমর্থক দল পাল্টে বিরোধী বাম অথবা কংগ্রেস শিবিরে সামিল হয়ে পড়েন । আর যারা বুবাগ্রা কে ভালবেশে একদিকে মথা দলে আজো আটকা পরে আছেন তারা প্রকৃত অর্থে বিজেপি দল কে ঠিক আগের মতোই মেনে নিতে অস্বীকার করছেন। আর তাঁর আরও এক ঝলক চোখে পড়েছে খুমুলুং থেকে। কয়েক মাস পূর্বেই খুমুলুঙ্গে বিজেপির পার্টি অফিসে ভাংচুর এর খবর প্রকাশ্যে আসে। তখন ও একই ভাবে বিজেপি মথার আভ্যন্তরীণ বিবাদ প্রকাশ পায়। এবারেও তাই। মঙ্গলবার গভীর রাতে বিজেপির পার্টি অফিস ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চেয়ার টেবিল ভাঙ্গার সাথে সাথে ভারত মাতা এমনকি রাষ্ট্রপতির ছবি ও ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, খুমুলুঙ্গে কোনোভাবেই বিজেপি কে ঠায় দিতে নারাজ মথা কর্মীরা। বিজেপির কোনোরকম প্রভাব সহ্য করতে নারাজ তারা।
রাজ্য পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিজেপি সরকার নিজেদের অফিস কার্যালয় গুলো কেই নিজেদের শরিক দলের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন না, এই অবস্থায় রাজ্য বাসী কে কিভাবেই বা নিরাপত্তা দেবেন তারা ?
বাম সরকার থাকাকালীন পাহাড়ে গণ মুক্তি পরিষদ যেভাবে আদিবাসী , বাঙ্গালী অবাঙ্গালী দের নিয়ে যৌথভাবে রাজ্য পরিচালনায় ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে, তাঁর শত ভাগের এক ভাগ ও করতে পারেনি বিজেপি সরকার এমনটাও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল দাবি করছে। এমনকি এই অবস্থা চলতে থাকলে রাজ্যে সরকার টিকিয়ে রাখা ও মুশকিল হয়ে উঠতে পারে বিজেপির জন্যে।
ওদিকে তিপ্রা মথা কে নিজেদের শরিক বললেও মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলি তে তাদের এক্তিয়ার প্রদান করতে অনীহা দেখানো হয়েছে। এই নিয়ে শুরুতেই ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। এর পরেও এডিসি এলাকায় সার্বিক দিক থেকে কোন ধরণের উন্নয়ন হয়নি এই ৭ বছরে এমনটাও বারংবার অভিযোগ উঠে আসছে। খুমুলুং এ ২০২৩ সালে মথা নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার পর থেকেই রাজ্যের শাসক দল হয়েও বিজেপি শিবির খুমুলুঙ্গে টু শব্দ টিও করতে পারে না। এক কথায় রাজ্যে বর্তমানে বিজেপি মথার মাঝে সাপে নেউলে সম্পর্ক। বিশ্বস্ত সুত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, পাহাড় থেকে একটা বিরাট অংশের ভোটার অতি শীঘ্রই মথা বিজেপি ছেড়ে বিরোধী বাম অথবা কংগ্রেস শিবিরে মিশে যেতে চলেছে যা কেবল মাত্র সময়ের অপেক্ষা।
এই অবস্থায় নিজেদের আভ্যন্তরীণ বিবাদ প্রশমনে কি ভূমিকা নেবে বিজেপি দল ? নাকি সময়ের স্রোতের সাথেই ভেসে যাবে বিজেপি সরকারের ২০৪৭ অব্দি নির্ধারিত পরিকল্পনা ?