India Pakistan war stops
ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ পূর্ব পরিকল্পিত, সব টাই কি লোক দেখানো, কে লুটে নিলো ফায়দা?
ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধে অবশেষে ফুল স্টপ পড়লো। ৭ই মে থেকে টানা ৪ দিন যাবত চলমান এই যুদ্ধে বহু সেনা , বিমান ঘাটি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে আরও বহু। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে উভয় দেশ। আবার উভয় দেশই বিশ্বের দরবারে নিজেদের পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শনের একটা দারুন সুযোগ ও পেয়েছে। কিন্তু আচমকা যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার পর যেখানে ভারতের বেশিরভাগ মানুষ খুশি হবার কথা সেখানেই একটা অজানা সন্দেহ বিরাজ করছে !
কেন এই যুদ্ধ ? এটা কি আদৌ কাকতালীয় নাকি পূর্ব পরিকল্পিত ছিল ? এই যুদ্ধের ফলে কাদের ফায়দা হল ?
দেখা গেছে যুদ্ধের পূর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি বার্তা দেন যে ভারত ও পাকিস্তান এর যুদ্ধ হলে কোন ধরণের মধ্যস্ততায় আসবে না মার্কিন সরকার। তাদের নিজেদের কেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু শনিবার বিকেলে গৃহীত সিদ্ধান্তের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প এর পোস্ট দেখে একটা অংশের মনে প্রশ্ন জাগছে। ট্র্যাম্প এর মধ্যস্ততার ফলেই ভারত ও পাকিস্তান মীমাংসার জন্যে রাজী হয়েছেন বলে উনি দাবী করেছেন। এদিকে পাকিস্তান যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই তেজি করতে গিয়ে আইএমএফ থেকে বাড়তি ঋণ আদায় করেছে সেখানে আচমকা যুদ্ধ বিরতি।
তাঁর চাইতে ও আশ্চর্যয়ের কিছু বিষয় উঠে এসেছে বিবিসি নিউজ এর দেওয়া তথ্য থেকে। বিবিসি র একটি প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ভারত ও পাকিস্তানের ২০২৫ এর যুদ্ধের কথা এবং যুদ্ধ কৌশল নিয়ে আগেই সমস্ত কিছু লিখে গেছেন। যা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি সংস্থার দাবী ছিল কোন রাজনৈতিক বা অন্য বিষয় কে ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে উভয়েই নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র শক্তি প্রয়োগ করবে। পাকিস্তান প্রথমে ভারতের পার্লামেন্ট কে কিংবা কাশ্মীর কে ঘিরে হামলা চালাবে এবং পরে ভারত তাঁর প্রত্যাঘাত করতে গিয়ে পাল্টা হামলা চালাবে। আর এই সমস্ত ঘটনার জন্যে ভবিষ্যৎ থেকে একটি বছর বেছে নেওয়া হয়েছিল। আর সেটি ছিল ২০২৫ সাল। আর ঠিক সেই মোতাবেক সমস্ত ঘটনা যেন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। আমেরিকার রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে এই আশঙ্কা প্রকাশিত হয়েছিল।
এই যুদ্ধে লাভবান কারা হলেন ?
একদিকে দেখতে গেলে পেহেলগাঁও কাণ্ডের ১০ দিন আগে থেকেই জঙ্গি দের অবস্থান নিয়ে সচেতন ছিল ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী। অভিযোগ উঠেছে ঘটনার দিনেও সেনা বাহিনী ঘটনা স্থলে পৌছাতে বিলম্ব করে। স্থানীয় দের মদতে জঙ্গি রা গাঁ ঢাকা দেয় যার ফলে তাদের কে ধরতে ব্যর্থ হয় সেনা বাহিনী।
পরে এই নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী একের পর এক বিবৃতি দিতে গিয়ে বলেন , “কাউকে ছাড়া হবে না “ । অথচ সেই একই পরিস্থিতি তে নিজের শ্রীনগর যাত্রা ও বাতিল করেছিলেন তিনি। এমনকি ঘটনার পরেও ভোট প্রচারে বেরিয়েছিলেন মোদী জি। সার্বিক দিক থেকে বিশ্লেষকেরা দাবী করেছেন , এই ঘটনা ভারত সরকারের একটি অপরাজেয় রাজনৈতিক চাল মাত্র। যাতে নিরীহ ২৬ পর্যটক , বহু সেনা এবং নিরপরাধ মানুষ নিজের জীবন হারিয়েছেন।
এর পরেই ৭ই মে পাকিস্তানের ৯টি ঘাটি তে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ঘাটি গুড়িয়ে দেওয়া ও এই গোটা কর্মসূচীর নাম দেওয়া “অপারেশান সিঁদুর” , ঠিক যেন আরেকটা বড় চাল। সামনেই রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভার ভোট, তাঁর আগে এই নৃশংস কাণ্ড সংঘটিত করার পাশাপাশি জঙ্গি খতম এর অপারেশান এর নাম ‘ সিঁদুর ‘ দেবার মধ্যে দিয়ে ভারতের নারী শক্তি কে গেরুয়া শিবিরের কাছে ঝুকিয়ে দেওয়া টা একটা সলিড স্ট্র্যাটাজি।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই সব কিছুর মাঝে চাপা করে গেছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল এর ইস্যু। যা কৃষক আন্দোলনের মতোই বড় আকার ধারন করতে পারতো। তবে কি সেই সম্ভাবনা ঠেকাতেই এই মাস্টার স্ট্রোক? একটা অংশ ধর্মের ভিত্তিতে ও ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়েছে সর্বত্র। ভারত কে হিন্দু রাষ্ট্রে রূপায়িত করার চেষ্টায় কি আরও এক ধাপ এগোনো গেল তবে ?
অন্যদিকে ট্র্যাম্প এর ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। ট্র্যাম্প এর নিজস্ব বিবৃতি তেই রয়েছে গড়মিল। তবে যাই হোক, সার্বিক দিক থেকে যুদ্ধ কখনোই কারো জন্যেই মঙ্গল কারী নয়। ভারত পাকিস্তানের এই দ্বন্দে যারা শহীদ হলেন এবং অচিরে প্রাণ হারালেন তাদের প্রতি রইলো অশেষ শ্রদ্ধা।