Gurudwara sahib in Agartala

 শিখ ধর্মের প্রবর্তক তথা গুরু নানক সহ ১০ম তথা শেষ গুরু গোবিন্দ সিং রচিত গুরু গ্রন্থ সাহেব এর পাঠ এবং পূজার্চনা যেখানে হয় সেই পবিত্র স্থান কেই শিখ ধর্মানুযায়ী বলা হয় গুরুদ্বার।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার সন্নিকটে এমনই এক গুরুদ্বার রয়েছে। যার বিষয়ে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না। আগরতলা শহর থেকে মাত্র ৬কিমি দূরে ৭৯ টিলা এলাকায় গড়ে উঠেছে এই গুরুদ্বার হাসেব টি।
১৯৯০ সালে ৭৯ টিলা এলাকায় স্থিত সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ক্যাম্পে সীমান্ত রক্ষীদের দ্বারা এটি স্থাপন করা হয়। তবে এতো বছর এটি প্রকাশ্যে আসেনি। কিংবা বলা যায় যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় কে কেন্দ্র করে এখানে বাহ্যিক লোক জনদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল যে কারণে কেউই এর আগে এখানে আসেননি। কিন্তু ২০১৭ সালের পর স্থানটিকে সকলের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
গুরুদ্বারের মূল ফটকের বাইরেই প্রথমে রয়েছে মহাদেব এর মন্দির। এর পরেই গুরুদ্বারে প্রবেশের পথ। শিখ ধর্মাবলম্বীদের মতে গুরু দ্বারে প্রবেশ এর পূর্বে অবশ্যই মাথায় কাপড় থাকা কিংবা কোনো কিছু দিয়ে মাথা ঢেকে রাখা বাঞ্ছনীয়। যেমনটা সাধারণত শিখ ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে হামেশাই আমাদের চোখে পড়ে। তারা পাগড়ী অথবা রুমাল হামেশাই মাথায় পরিধান করে থাকেন। যেহেতু আমাদের এখানে এধরণের কোনো চল নেই তাই গুরুদ্বারের ভেতরে প্রবেশের আগে ভক্তদের জন্যে আলাদা করে কিছু রুমাল এর ব্যবস্থা করা আছে।
যেটা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে গুরুদ্বারে কোনো মূর্তি পূজা হয়না। বরং গুরু গ্রন্থ সাহেব কেই পুজো করা হয়ে থাকে। আমাদের হিন্দু ধর্মে যেমন গীতা , ইসলাম ধর্মে কোরান ইত্যাদি ধর্মীয় গ্রন্থ আমাদের কাছে আরাধ্য ঠিক তেমনি শিখ ধর্মের ক্ষেত্রে গ্রন্থ সাহেব কে পুজো করা হয় । শিখ ধর্মীরা মূর্তি পুজোয় বিশ্বাস করেন না। তাদের ধর্মগুরু গুরু গোবিন্দ সিং জীবনের যে মাহাত্ম গ্রন্থ সাহেব এ লিখে গেছেন সেটাই তাদের কাছে সর্বোপরি।
উল্লেখ্য, আগরতলা স্থিত এই গুরুদ্বারে রোজ বহু পর্যটকের সমাগম ঘটে। তবে রবিবারে সংখ্যাটা খানিকটা বেশিই থাকে। কেননা রবিবারে গুরুদ্বারে লঙ্গরের ব্যাবস্থা করা হয়। এদিন সকলকে চাটাই এ বসিয়ে এক সারিতে প্রসাদ বিতরণ করা হয়ে থাকে। একেই সাধারণত লঙ্গর বলে। শিখ ধর্মের মূল তীর্থ স্থান পাঞ্জাব স্থিত স্বর্ণ মন্দিরে এধরণের বিশাল লঙ্গর বসে। যাতে হাজার হাজার লোক প্রসাদ গ্রহন করতে আসেন।
ছোট্ট পরিসরে হলেও এই গুরুদ্বারে ভক্তদের জনসমাগম অনেকটাই বেড়েছে বিগত কয়েক বছরে। বিশেষ করে করোনা কাটিয়ে উঠার পর থেকে এই স্থানের প্রসিদ্ধি অনেকটা বেড়েছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই এই গুরুদ্বারে প্রবেশ করতে পারেন এবং লঙ্গরে ও অংশ গ্রহন করতে পারেন।
[5:59 pm, 22/4/2024] Shatarupa: webste

Leave A Reply