Pratima Bhowmik : রাজ্য রাজনীতি থেকে হাড়িয়ে যাচ্ছেন না তো কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রাতিমা ভৌমিক ?

 

প্রতিমা ভৌমিক ত্রিপুরার রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গের মধ্যে একটি অতি সুপরিচিত নাম। তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রূপে উনার দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ১ নং পশ্চিম ত্রিপুরা আসন থেকে বিজেপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিরাট মাপের মার্জিনে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস দলীয় প্রার্থীদের পরাস্ত করে জয় লাভ করেছিলেন প্রতিমা ভৌমিক। তিনিই রাজ্যের প্রথম মহিলা প্রতিমন্ত্রী। বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার মন্ত্রকে সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন প্রতিমা ভৌমিক।

Pratima Bhowmik

১৯৬৯ সালের ২৮শে মে উনার জন্ম হয় ত্রিপুরার ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। ভারতীয় জনতা পার্টির হাত ধরেই উনার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পদার্পণ। সেই থেকে দীর্ঘ বাম শাসিত ত্রিপুরাতে ও তিনি বিজেপির সমর্থক ছিলেন। অবশেষে ২০১৮ সালে রাজ্যের সরকার পরিবর্তন হয়। আর তার পরেই ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে একেবারে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হন তিনি।
রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচী তে বরাবরই উনার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বিগত ৫ বছর যাবত উনার দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তিনি। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই যেন প্রতিমা ভৌমিক এর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্রমে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। এমনটাই দাবী করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ২ লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী প্রতিমা ভৌমিক কে আসন্ন ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে দেওয়া হয়নি টিকিট। পরিবর্তে মনোনীত করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব কে। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে মনোনীত দের নাম ঘোষণার পর পরেই প্রতিমা ভৌমিক এর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে সেই নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় গোটা রাজনৈতিক মহলে। এদিকে মাস দুয়েক পূর্বে অসুস্থতার দরুন ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির জয়ী বিধায়ক সুরজিত দত্তের প্রয়াণের পর ৭ রামনগর কেন্দ্রটি হয়ে পড়ে অভিভাবক শূন্য। সুতরাং এক্ষেত্রে উপনির্বাচন নিশ্চিত ছিল।
অনেকেই আশা করছিলেন যে অন্তত ৭ রাম নগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হতে পারে প্রতিমা ভৌমিক কে। কিন্তু সমস্ত আশায় এক প্রকার জল ঢেলে দিয়ে ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করা হল আগরতলা পুরো নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার কে। সার্বিক দিক থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রতিমা ভৌমিক কে একপ্রকার কোণঠাসা করে দিয়েছে শাসক দল বিজেপি।
এরই মধ্যে আবার ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিমা ভৌমিক কে প্রার্থী করা হয়েছিল ২০২৩ এর উপনির্বাচনে। সেখানেও বাম কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী কে ভোটের লড়াইয়ে বাজীমাৎ করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন প্রতিমা ভৌমিক। কিন্তু সাংসদ পদ রক্ষার্থে বিধায়িকা পদ থেকে ও ইস্তফা দেন তিনি। উনার পরিবর্তে বর্তমানে ধনপুর কেন্দ্রে বিধায়কের দায়িত্ব পালন করছেন পুনরায় উপ নির্বাচনে জয়ী বিধায়ক বিন্দু দেবনাথ।
সুতরাং, সব দিক থেকে ক্ষতিয়ে দেখা যায় প্রতিমা ভৌমিকের হাতে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র দিন কয়েকের নাম মাত্র প্রতিমন্ত্রীর ট্যাগ রয়েছে। যা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পরেই স্থানান্তরিত হবে অন্য কারো হাতে। অর্থাৎ রাজ্য রাজনীতিতে এক কালের বরিষ্ঠ নেত্রী তথা বহু পুরনো বিজেপি কর্মী বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে একজন সাধারণ বিজেপি কর্মী হয়েই থেকে যাবেন। যদিও এটা অনুমান মাত্র।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক মঞ্চে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো আশ্চর্য চোখে পড়ে। তাই প্রতিমা ভৌমিক এর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কি পরিকল্পনা রয়েছে সেটা যদিও এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আপাতত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক এর অস্তিত্ব যে কিছুটা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ সেটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই। বাকিটা যদিও সম্পূর্ণ সময় সাপেক্ষ বিষয় এটাই বলাবাহুল্য।

Leave A Reply