Indigo Flight Emergency Landing : মাঝ আকাশে হঠাৎ চরম আতঙ্ক! পাইলটদের মুখে শোনা গেল বারবার – “MAYDAY, MAYDAY”!
অসমের গুয়াহাটি থেকে তামিলনাড়ুর চেন্নাই যাওয়ার পথে ভয়াবহ এক মুহূর্তের সম্মুখীন হল IndiGo-র 6E-6764 ফ্লাইট। মাঝ আকাশে জ্বালানির ঘাটতি বুঝে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নিলেন পাইলটরা। শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে নিরাপদ অবতরণ সম্ভব হলেও, শুরু হয়েছে তদন্ত – আর রস্টার থেকে সরানো হয়েছে দুই পাইলটকেই।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার। বিকেল ৪টে ৪০ মিনিটে গুয়াহাটি থেকে উড়াল দেয় IndiGo-র A321 বিমানটি, যার গন্তব্য ছিল চেন্নাই। ফ্লাইটে ছিলেন ১৬৮ জন যাত্রী। ঠিক সন্ধে ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ চেন্নাইয়ে অবতরণের কথা ছিল। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল… কিন্তু রানওয়ে ছোঁয়ার মুখে আচমকা বিপদ বুঝতে পারেন পাইলটরা। চেন্নাইয়ের আকাশে যখন বিমানটি নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই শুরু হয় বিপত্তি। রানওয়ে ছুঁয়ে ফের উঠে যায় বিমানটি — যাকে বিমান চলাচলে বলা হয় Go-Around বা Balked Landing। এই ধরণের পদক্ষেপ সাধারণত নেওয়া হয় যখন ল্যান্ডিং নিরাপদ নয় – হতে পারে খারাপ আবহাওয়া, যান্ত্রিক সমস্যা বা অন্য কোনও অজানা কারণ।
এবার, পাইলটরা কন্ট্রোল রুমে পাঠান MAYDAY বার্তা। অর্থাৎ, তারা জানিয়ে দেন – এটি সাধারণ বিপদ নয়, এটি জরুরি অবস্থা। দ্রুত যোগাযোগ করা হয় বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের সঙ্গে। তখন বিমানটি বেঙ্গালুরু থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে। প্রস্তুত রাখা হয় চিকিৎসা ও দমকল দল। অবশেষে রাত ৮টা ২৫ মিনিটে বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে।
যাত্রীদের অনেকেই জানান – এক মুহূর্তে বিমান নামছিল, পরমুহূর্তেই সাঁ সাঁ করে উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। অনেকে আসন থেকে ছিটকে পড়ার উপক্রম হয়। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো কেবিনে। কিছু যাত্রী ভয়ে চিৎকারও করে ফেলেন। তবে দক্ষ পাইলটদের জন্যই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সামলে ফেলা যায়।
জানা গিয়েছে, বিমানটিতে জ্বালানি কম ছিল – যা ছিল বিপদের মূল কারণ। কেন এই পরিকল্পনার ভুল, তা নিয়েই শুরু হয়েছে তদন্ত। আপাতত দুই পাইলটকে ডিউটি রস্টার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার মাত্র একদিন আগেই, শুক্রবার, IndiGo-র আরেকটি বিমানে মাঝ আকাশে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। মাদুরাইগামী সেই বিমানটি বাধ্য হয় চেন্নাই ফিরে আসতে। এ ছাড়া কিছুদিন আগেই আমদাবাদে ভেঙে পড়ে Air India-র একটি বিমান। পরপর এমন ঘটনা উড়ান পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, MAYDAY শব্দটি এক আন্তর্জাতিক সংকেত – যা পাইলটরা ব্যবহার করেন যখন পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও বিপজ্জনক হয়। এটি কেবলমাত্র প্রাণঘাতী বিপদের সময়েই ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ তা সাধারণ বিপদ নয়।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস হতে পারে না। এবার প্রশ্ন উঠছে – বারবার কেন এমন ঘটনা ঘটছে? জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় বা পূর্ব পরিকল্পনায় কোথায় ত্রুটি থাকছে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে IndiGo-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।