HIRA yug failing in Tripura

২০১৮ এর আগে রাজ্যে বোধয় এতো পোস্টার আর কখনো চোখে পড়েনি। এই পোস্টার এর পেছনে কত লক্ষ কোটি খরচ হচ্ছে তার কোনো লেখা ঝকা নেই। কিন্তু পোস্টার ছাপিয়ে প্রচার কিন্তু দিব্যি চলছে। তার উপর আবার এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে রাজ্যে বিজেপি সরকারের উন্নয়নের যে এডিটেড চলচ্চিত্র চলছে তা তো পথে ঘাটে সবাই দেখছেন। কিন্তু বাস্তবের সাথে আদৌ কতটা মিল রয়েছে এই চলচ্চিত্রের ? সেটা খতিয়ে দেখলে আম জনতার চক্ষু কপালে উঠে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জোর গলায় বিভিন্ন সভায় মিছিলে বলেছিলেন মোদী জীর সরকার ত্রিপুরা কে হীরা উপহার দিয়েছে। দিয়েছে জল জীবন মিশন। দিয়েছে সুন্দর চলাচলের জন্যে পথ। যাতায়াত পরিষেবা দারুন উন্নত হয়েছে এই কয়েক বছরে। কিন্তু বাস্তবে রূপ তো বলছে অন্য কথা ! তবে কোনটা সত্যি ? বাস্তবের চিত্র নাকি জনসভার বক্তৃতা?
রাজ্যের আনাচে কানাচে থেকে রোজ বেহাল পথ ঘাট , জল ব্যবস্থা , বিদ্যুৎ পরিষেবার খবর উঠে আসছে। এবার আরও এক রাস্তার বেহাল দশার চিত্র ফুটে উঠেছে কাঞ্চনপুর মহকুমা থেকে। বেহাল সড়ক গুলি মেরামতের দাবিতে বুধবার ভোর থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার আনন্দবাজার থেকে রায়মনিপাড়া ভায়া শাকান শেরমন পর্যন্ত রাস্তায় বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হন আম জনতা। স্থানীয় গাড়ি চালক এবং এলাকাবাসি একযোগে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন এদিন। এই আন্দোলনে এদিন আশাপাড়া,আনন্দবাজার, সুভাষনগর,গছিরামপাড়া, শাখানটাং সহ বিস্তীর্ন জনজাতি অধ্যুমষিত এলাকাগুলি থেকে শত শত জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ সামিল হয়েছে ।
আন্দোলনকারীরা দের দাবী, আনন্দবাজার থেকে রায়মনিপাড়া পযর্ন্ত রাস্তা স্থাপন করার কথা দীর্ঘ দিন ধরেই চলছিল। ওই এলাকায় রাস্তা না করার ফলে দীর্ঘদিন ধরে আনন্দবাজার সংলগ্ন দশটি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ওই সব এলাকার জুমিয়ারা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছে না, মাথায় এবং পিঠে করে ১৫-১৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে উৎপাদিত ফসল নিয়ে তাদের আনন্দবাজার হাটে আসতে হয়। এলাকায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আনন্দবাজার হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্ভব হয় না। ফলে বহু বৎসর ধরে বিনা চিকিৎসায় অনেকেরই জীবন গেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই সব এলাকায় রাস্তা সারাইয়ের কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই রাস্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর হলো পি এম জি এস ওয়াই। কাঞ্চনপুর মহকুমায় পি এম জি এস ওয়াই রাস্তার নামে কোটি কোটি টাকার ঘোটলার সংবাদ একাধিক বার প্রকাশ হলেও দপ্তর কর্তা অর্থাৎ দপ্তরের মূখ্য বাস্তুকার বিমল দাশ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কাঞ্চনপুরে পি এম জি এস ওয়াই দপ্তর থেকে রাস্তা নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার নয়ছয় বানিজ্য চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। অথচ রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই।
এদিকে রাজ্য সরকার সুশাসন এর দামামা বাজিয়ে জনস্বার্থে প্রচার করতে কোটি কোটি খর্চা করছে শুধু পোস্টার ফ্লেক্স ফেস্টুন তৈরির কাজে। তার চাইতে বরং রাজ্যের যে সমস্ত স্থানে পথ ঘাটের বেহাল দশায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে সেখানে যদি এই অর্থ বিনিয়োগ করা হতো তাহলে বাস্তবেই সুশাসন চলছে বলে জোর গলায় দাবী করা যেত।
খবর প্রকাশের পরেও এই বিষয়ে আগামী দিনে কি পদক্ষেপ নেবেন রাজ্য সরকার সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

Leave A Reply