Gandacherra fire breaking news
গণ্ডা ছড়ায় গিয়ে জন রোষের মুখে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সহ মন্ত্রী। জনতার ক্ষোভে ভাঙল মহকুমা অফিস। ১৮ নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এমন পরিস্থিতি আর কোনোদিন হয়নি বিজেপির। তবে এই ইঙ্গিত শুভ নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জনগণের এই ক্ষোভ সামনের দিনে রাজ্য বিজেপির জন্য তৈরি করতে পারে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ।
ত্রিপুরার জনগণ জেগে উঠেছে। শাসক দলীয় নেতারাই এবার জনসাধারণের রক্ত চক্ষুর শিকার। গণ্ডা ছড়ায় চরম অশান্তির পরিবেশ খতিয়ে দেখতে গিয়ে নয়া বিপদে বিজেপি নেতা মন্ত্রীরা।
বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় একের পর এক নজির বিহীন ঘটনা দেখে চক্ষু চরক গাছ রাজ্য বাসীর। ত্রিপুরার ইতিহাসে এধরণের মারাত্মক ঘটনা নজির বহিন, যেখানে পুলিশের মদত নিয়েই হামলা হুজ্জুতি চালাচ্ছে দুষ্কৃতী কারী। আর এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরিবর্তে সেই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করছেন খোদ থানাবাবুরাই। অভিযোগ খতিগ্রস্থ পরিবারের।
গত ৭ই জুলাই রথ যাত্রার দিনে গণ্ডা ছড়া মহকুমা ধিন লক্ষ্মীপুর এ.ডি.সি ভিলেজের ত্রিশ কার্ড এলাকার অন্তর্গত ডিগ্রী কলেজ লাগোয়া ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের গন্ডাছড়া ক্রিকেট মাঠে আয়োজিত আনন্দ মেলায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এক রিয়াং ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল গণ্ডা ছড়ার পরিস্থিতি। বিশেষ ভাবে গণ্ডা ছড়া স্থিত বাঙ্গালী পরিবার গুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি ও আক্রমণের শিকার। রাতারাতি নিঃস্ব হয়ে গেছে বহু পরিবার। গণ্ডা ছড়া বাজারে জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে দোকান পাঠ, সঙ্গে পুড়িয়ে মারা হয়েছে স্থানীয়দের গবাদি পশু। ভাংচুর করা হয়েছে বহু বাঙ্গালী বাসিন্দাদের বাড়িঘর, । সার্বিক ঘটনার বিষয়ে অবগত থাকা সত্বেও দেখা নেই রাজ্য সরকারের। গণ্ডা ছড়া পুলিশ প্রশাসন এর ভূমিকা ও শূন্য। আর এদিকে সর্বহারা হয়ে গণ্ডা ছড়া বাসী রা আজ নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে ঘেরাও করলেন রাজ্যের শাসক দলীয় মন্ত্রী ও নেতা বৃন্দ দের।
ঘটনার এতদিন বাদে গণ্ডা ছড়ার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান বিজেপি দলীয় এক ঝাঁক নেতৃত্ব। তার মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়, ছিলেন দল বদলের মাস্টার সুবল ভৌমিক, রামপদ জমাতিয়া সহ প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরাও। আর তাতেই বাঁধে বিপত্তি। কোনোরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পুলিশের সহায়তা নিয়ে মহকুমা অফিসে আশ্রয় নেয় তারা। স্থানীয়দের ক্ষোভ ছিল চরম পর্যায়ে। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারতো কোনো বিশাল বিপত্তি। তাই ভয়ে বিজেপি নেতারা আশ্রয় নেয় মহকুমা অফিসে। তবে এখানেই শেষ হয়নি। সেই নেতাদের পিছু করে মহকুমা অফিসে ছুটে আসে জনতার এক বিশাল অংশ। এবং ভাংচুর করা হয় মহকুমা অফিস।
ক্ষতি গ্রস্থরা খোলাখুলি অভিযোগ করেছেন যে গণ্ডা ছড়ায় সংগঠিত অগ্নি কাণ্ড ও লুটপাটের পেছনে সম্পূর্ণ ভাবে প্রশাসনিক মদত রয়েছে। এমনকি ঘটনার দিনে পরিস্থিতি সামাল না দিয়ে উল্টে মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে ব্যাস্ততা দেখা দেয় গণ্ডা ছড়া থানার ওসি সহ থানা বাবুদের মধ্যে।
যে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে সেই ঘটনায় আমরা ও সমান ভাবে ব্যাথিত। তার আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইন তাদের কঠিন থেকে কঠিন তম শাস্তি প্রদান করুক আমরা সেটাও চাই। কিন্তু এভাবে বাঙ্গালী পরিবার গুলির উপর অকথ্য অত্যাচার , বাড়িঘর , দোকান পাঠ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বা জড়িয়ে আছে তাদের কে অতিসত্বর চিহ্নিত করে কঠিন থেকে কঠিন তম শাস্তির ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।
এধরণের নেক্কার জনক ঘটনা কি ত্রিপুরার সংস্কৃতি তে আদৌ কখনো ছিল ? মুখ্যমন্ত্রী থেকে দলের রাজ্য সভাপতি কিংবা দলের বিজেপি মুখপাত্র – সবাই জোর গলায় দাবী করছেন যে রাজ্যে সন্ত্রাসের বাতাবরণ নেই। ভোট সন্ত্রাস কিংবা কোনো ধরণের সন্ত্রাস কেই বিজেপি প্রশ্রয় দেয় না। সুশাসন কায়েম রয়েছে ত্রিপুরায়। তবে কি এটাই সুশাসন? যেখানে রাজনৈতিক উস্কানি দিয়ে দিনের পর দিন খুন হচ্ছে। জাতিগত উস্কানি দিয়ে বাঙ্গালী সমাজের উপর এডিসি এলাকা গুলিতে তীব্র আক্রমণ করা হচ্ছে। প্রকৃত দোষীদের বাছাই করে শাস্তি না দিয়ে নিরপরাধ মানুষ গুলোকে ভোগান্তি তে ফেলা হচ্ছে আর তাতে মদত যোগাচ্ছে খোদ সরকারি পুলিশ প্রশাসন ?
যে সমস্ত বাড়ি ঘর গুলো ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে তাদের উপার্জনের শেষ সম্বল টুকু সেই পুরে যাওয়া দোকান ঘর । সেই ক্ষতি পূরণ কি সরকার দেবেন, ক্ষতি গ্রস্থ পরিবার গুলি কে ঘুরে দাড়াতে কি সহায়তা করবে রাজ্য সরকার ? সেটাই এখন দেখার বিষয়।