Central Jail Bishalgarh Tripura

আগরতলা ১৪ মে মঙ্গলবার সকালে বিশালগড়স্থিত কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে পালিয়ে গেল একসময়ের জনমনে ত্রাস সৃষ্টিকারী বিচার প্রক্রিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত এনএলএফটি জঙ্গি স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরা। পূর্বেও দুইবার সে জেল থেকে পালিয়েছিল।
প্রসঙ্গত,মঙ্গলবার সকালে বিশালগড়স্থিত কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কয়েদিদের হিসেব মেলাবার সময় দেখা গেল একজন কয়দি নেই। সঙ্গে সঙ্গে কয়েদিদের গুনতি শুরু হলে দেখা যায় স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরা গুনতিতে গরহাজির। সঙ্গে সঙ্গেই সংশোধনাগারের ভেতরে এবং বাইরে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। উল্লেখ্য,এনএলএফটি জঙ্গি দলে এই স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা অত্যন্ত হিংস্র প্রকৃতির সদস্য ছিল বলে সূত্রের খবর। তার বিরুদ্ধে রয়েছে গণহত্যা এবং পুলিশ কর্মী খুনের দায়। তাছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের অপরাধে দুষ্ট তো সে ছিলই। জানা যায় ২০১৪ সালে চুরির মামলায় এবং পুলিশ কর্মী অঙ্খ্য মগ হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছিল পুলিশ। বিচারে তার সাজা হয়। সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে সে ছিল বিশালগড়স্থিত কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। কিন্তু, বিভিন্ন ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশালগড় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় স্বর্ণকুমার। কিন্তু তার দুর্বৃত্তপণার জন্য মনিপুরের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। রাজ্য পুলিশ সে সময় তাকে এই রাজ্যের অপরাধী বলে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসে এবং বিচার প্রক্রিয়া শেষে আবারও তার জায়গা হয় কাঞ্চনপুরস্থিত সংশোধনাগারে। কিন্তু যার রক্তে অপরাধ ঢুকে গেছে, এবং যার ভেতরে নানা ধরনের দুষ্টামি বুদ্ধি রয়েছে তাকে, কাঞ্চনপুরের সংশোধনাগারে রেখে কতটুকু শুধরানো যায় সে বিষয়টা বোধহয় সেখানের সংশোধনাগারের জেলার এবং কারারক্ষ্মীদের আন্দাজের বাইরে ছিল। যার কারনে ঢিলেঢালা প্রহরার সুযোগ নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে আবারো কারারক্ষীদের চোখের ধূলো দিয়ে পালিয়ে যায়। যথারীতি সে সময়ে পুলিশের দৌড়ঝাপ শুরু হয় স্বর্ণকুমারের পালানোর ঘটনা নিয়ে। বহু খোঁজখবর করে আবারো তাকে বহিঃরাজ্য থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় রাজ্য পুলিশ। আবারো বিচার প্রক্রিয়ার শেষে তার জায়গা হল বিশালগড়ের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে।

Central Jail Bishalgarh Tripura
Central Jail Bishalgarh Tripura

কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কর্মরত জেল পুলিসদের গাফিলতির কারনে তৃতীয় বারের মতো ফের সে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কয়েদিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার সময় দেখা যায় কয়েদি স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরা নেই। কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জেলার দেবাশীষ শীল ও সাব জেলার নান্টু দাসের নজরে আসে বিষয়টি।তারপর শুরু হয় পুলিশের দৌড়ঝাঁপ। সিপাহীজলা জেলার পুলিশ সুপার, আইজি প্রিজন সহ বিশালগড় থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ছুটে যায় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরার বাড়ি দক্ষিন জেলার মনু বাজারের ছোট শাকবাড়ি এলাকায়। সেখানেও পুলিশ খোঁজখবর শুরু করেছে বলে জানা গেছে।পলাতক কয়েদি স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরার বিরুদ্ধে বিশালগড় থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। দৌড়ঝাঁপ চলছে রাজ্য পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের। এখন দেখার পুলিশ পলাতক কয়েদি স্বর্ণ কুমার ত্রিপুরাকে জালে তুলতে পারে কিনা। তবে তার পালানোর ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কদর্যরূপ আবারো প্রকাশ্যে। এই ঘটনায় প্রমাণিত কারারক্ষীদের চরম গাফিলতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাছাড়া জেলারের চূড়ান্ত ব্যর্থতাও সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, স্বর্ণকুমারের জেল থেকে পালানোর ঘটনায় আর্থিক লেনদেনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি, সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার কাঞ্চন দক্ষিণার লেনদেনের ফলেই জেল থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছে কুখ্যাত এই জঙ্গি উঠলো অভিযোগ । জেলের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার দেবাশীষ শীল জেল থেকে এই জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে বলে এমনটাও অভিযোগ। যদিও
এবিষয়ে জেলার দেবাশীষ শীলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি। কিন্তু তৃতীয়বারের মতো এই সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কারা কারা জড়িত সে বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।

 

কৈলাসহরে রাস্তা অবরোধ

 

Leave A Reply