CM Dr Manik Saha Inauguration : রাজ্যের সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও আধুনিক করার লক্ষ্যে আজ বুধবার পরিবহন দপ্তরের উদ্যোগে রাজধানীর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে অনুষ্ঠিত হল বিশেষ এক রোড সেফটি ইভেন্ট। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার হাত ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হয় ১৬টি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স এবং ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয় যানবাহনের অবস্থান ট্র্যাকিং এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সবুজ পতাকা নেড়ে নতুন সংযোজিত অ্যাম্বুলেন্সগুলির যাত্রা সূচনা করেন। এই অ্যাম্বুলেন্সগুলির মধ্যে ৮টি হস্তান্তর করা হয়েছে রাজ্য ফায়ার সার্ভিস দপ্তরকে এবং বাকি ৮টি থাকবে বিভিন্ন থানার অধীনে। এই উদ্যোগে ত্রিপুরার জরুরি পরিষেবাগুলিতে দ্রুততা এবং সঠিকতা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, “যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে অনেকেই এখনও সিট বেল্ট ব্যবহার করেন না। হেলমেট ছাড়া বাইক চালান। আবার অনেকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালান কিংবা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালিয়ে থাকেন—এসব বিপজ্জনক অভ্যাস থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক সময় মাথায় আঘাত লাগার জন্য প্রাণহানি ঘটে। বাইক চালক ও আরোহী—উভয়ের জন্যই হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক, এবং এই নিয়ম যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য ট্রাফিক দপ্তরকে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি চালু করা হয়েছে একটি নতুন যানবাহন অবস্থান ট্র্যাকিং এবং মনিটরিং ব্যবস্থা। এই প্রযুক্তির সাহায্যে এখন সরকারি ও বেসরকারি যানবাহনের গতিবিধি, গতি, রুট, ও কার্যক্ষমতা সহজেই পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এর মাধ্যমে দুর্ঘটনা কমানো, জরুরি সেবা দ্রুত পৌঁছানো এবং পরিবহন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা সম্ভব হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “যেসব সরকারি যানবাহনের বয়স ১৫ বছরের বেশি, সেগুলোকে স্ক্র্যাপিং পলিসির মাধ্যমে ধাপে ধাপে অবসরে পাঠানো হচ্ছে।” পাশাপাশি ঘোষণা করা হয়েছে ‘রাহ বীর’ নামক একটি নতুন প্রকল্প, যা ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে চালু হবে। এই প্রকল্পে সড়ক নিরাপত্তা, সচেতনতা, এবং প্রযুক্তিনির্ভর পরিচালনার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ডা. মানিক সাহা পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, “জাতীয় গড়ের তুলনায় ত্রিপুরা রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অনেক কম। তবে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার সম্পূর্ণভাবে শূন্যে নিয়ে আসা।” তিনি জানান, জনবহুল এলাকার তুলনায় দুর্ঘটনার প্রবণতা বেশি থাকে জনশূন্য বা ফাঁকা এলাকায়, বিশেষত বৃষ্টি, কুয়াশা অথবা ওভারলোডিং-এর মতো পরিস্থিতিতে।
এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধায়ক দীপক মজুমদার, রাজ্য পুলিশের ডিজি অনুরাগ ধ্যানকর সহ রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।