Smugglers caught in Bishalgarh

নেশার টাকার জোগাড় করতে জীবিত বাবা কে মৃত বলে তার শ্রাদ্ধের জন্যে সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে গেল দুই ছেলে। অতি আশ্চর্যের বিষয় বটে। কিন্তু বর্তমান নেশা গ্রস্থ যুব সমাজের জন্যে আশ্চর্য বলতে কিছুই নেই। নেশার টাকা যোগার করতে এরা যা নয় তাই করতে পারে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বাবার শ্রাদ্ধের মিথ্যে অভিনয় করে আর্থিক সাহায্য চাইতে গিয়েও লাভ হল না। অবশেষে স্থানীয় সচেতন নাগরিকের হাতে ধরা পড়লো দুই যুবক।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, আজ শুক্রবার দুপুরে বিশালগড় ব্রীজ চৌমুহনি এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। উল্লেখ্য বিগত কয়েক বছরে রাজ্যের আর বাকি মহকুমা গুলোর মতোই বিশালগড় মহকুমা তেও দেদার বৃদ্ধি পেয়েছে অবাধে নেশা সামগ্রীর পাচার ও নেশার কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠেছে বেশ কিছু এলাকা। যার কারণে উঠতি বয়সী যুবকেরা এই নেশার কবলে আসক্ত হয়ে নানা রকম অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে চুরি ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটাতেও দুবার চিন্তা ভাবনা করছে না। আর এবার তো অপরাধের সব ধরণের গণ্ডী ছাড়িয়ে গোটা হিন্দু ধর্মের অপমান করে একেবারে জীবন্ত বাবা কে মৃত বানিয়েই নেশার টাকা যোগার করতে নেমেছে কতিপয় অসৎ ছেলে পুলে।
হিরোইন, ব্রাউন সুগার, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল সেবন না করলে প্রতিনিয়ত রাজ্যে অনেক যুবক মারা যাবে, এমনটাই উপক্রম হয়েছে এখন। আর এই নেশার জন্যে টাকার জোগাড় করতে গিয়ে নিজের জীবিত থাকা বাবার নামে শ্রাদ্ধের টাকা চাইতে গিয়ে বিশালগড় ব্রীজ চৌমুহনি এলাকায় আটক রানিবাজার ও আগরতলা বর্ডার গোল চক্কর এলাকার দুই যুবক। আজ দুপুরে বিশালগড় বাজারে সমস্ত ব্যবসায়ীদের কাছে বাবার শ্রাদ্ধের নামে প্রত্যেক দোকানে টাকা চাইতে আসে। সেই সময় বাজার ব্যবসায়ীদের সন্দেহ হওয়াতে ২ যুবককে আটক করে উত্তম মাধ্যম দিতেই দুই যুবক স্বীকার করে যে নেশার টাকার যোগাড় করতেই নাকি জীবিত অবস্থায় বাবাকে মৃত বলে শ্রাদ্ধের নামে টাকা তুলে সে টাকা দিয়ে নেশা দ্রব্য ক্রয় করতে চেয়েছিল। নিঃসন্দেহে নেশার টাকা জোগাড়ের জন্যে এ যেন এক নতুন পদ্ধতির আমদানি হয়েছে বাজারে।
তাদের কে আটক করার আগে পর্যন্ত ঐ দুই যুবক মার্কেট থেকে বেশ কিছু টাকা জোগাড় করে নিয়েছিল। এর পরেই বাজার ব্যবসায়ীরা দুই যুবককে তুলে দেয় বিশালগড় থানা পুলিশের হাতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আছে ভারতীয় মজদুর সংঘ রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতৃত্ব সজল কুমার দেব, বিশালগড় বাজার ব্যবসায়ী সুব্রত সাহা উরফে বাসু সহ অন্যান্যরা । উনারা জানিয়েছেন এই সমস্ত নেশায় আসক্ত যুবকদের কারণে যারা প্রকৃত অর্থে সাহায্যের জন্য বাজার ব্যবসায়ীদের কাছে আসেন তখন ওনারা সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। রাজ্য প্রশাসন যেন এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সজল কুমার দেব জানান সনাতন ধর্মের নাম বদনাম করা এই সমস্ত নেশায় আসক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে আইনি ভাবে কঠিন পদক্ষেপ গৃহীত হওয়া প্রয়োজন। হিন্দু সমাজে নিজেদের মা-বাবা মারা যাওয়ার পর মার্কিন কাপড় পরে গলায় ধরা নিয়ে মানুষ ১৫ থেকে ৩০ দিন অবীস করার পর শ্রাদ্ধ শান্তি করেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এ সমস্ত নেশাগ্রস্ত যুবকরা সামান্য কটা টাকার জন্যে নিজের জীবন্ত পিতা মাতার প্রয়াণের আগেই শ্রাদ্ধ করতে উদ্যত হয়ে পড়েছে। এতে সামাজিক ভাবেও একটি সাংঘাতিক প্রভাব পড়ছে বলে দাবী তাদের। তবে সর্বোপরি, সমাজ কে সুস্থ করে তুলতে হলে আগে নেশা কারবারিদের কে সমূলে উৎখাত করতে হবে। তবেই আগামী দিনে একটি সুস্থ সমাজব্যবস্থার আশা করা যাবে।

Leave A Reply