Shariful Islam : শরিফুলের হত্যা কি শুধুই ব্যক্তিগত নাকি এর পিছনে রয়েছে কোনো রাজনৈতিক কারণ? কেননা, শরিফুলের দেহ পাওয়ার একদিন পেরোতে না পেরোতেই সামাজিক মাধ্যমে আরএসএস নেতার বিতর্কিত পোস্ট।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। এক মুসলিম তরুণ, শরিফুল ইসলাম—যিনি নিখোঁজ ছিলেন ৮ জুন থেকে—তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে গন্ডাছড়া বাজারের একটি পানের দোকানের ফ্রিজার থেকে। মৃতদেহটি একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে লুকানো ছিল।
এই ঘটনাকে ঘিরে উঠে এসেছে প্রেম, ধর্ম, এবং রাজনৈতিক বিদ্বেষের জটিল সমীকরণ। পুলিশ জানিয়েছে, শরিফুলের প্রেমিকা নবনীতা দাস, তাঁর ভাই চিকিৎসক দিবাকর সাহা, এবং দিবাকরের বাবা-মা সহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা সবাই এই খুনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
তবে যা এই ঘটনাকে আরও জটিল ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল করে তুলেছে, তা হলো— নিহার নাথ নামক একজন আরএসএস নেতার বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট। শরিফুল হত্যাকাণ্ডের পরে সেই পোস্টে এমন কিছু ইঙ্গিত দেওয়া হয়, যা থেকে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই খুন কি শুধুই প্রেমসংক্রান্ত নাকি এর পেছনে ছিল কোনো সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য? পোস্টটি পরে ডিলিট করা হলেও তার স্ক্রিনশট ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এই পোস্ট সামনে আসার পর BJP এবং RSS-এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় BJP বা RSS-এর সরাসরি কোনও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সামাজিক এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম ও নবনীতার মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ধর্মীয় কারণে সেই সম্পর্ক নবনীতার পরিবার মেনে নিতে পারেনি।” এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, ধর্মীয় পরিচয় এই খুনের পেছনে অন্যতম প্রভাবক হতে পারে।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে: এই খুন কি নিছক প্রেমের ফল, নাকি এর পেছনে রয়েছে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ? আরএসএস নেতার সেই বিতর্কিত পোস্টের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? এদিকে শরিফুলের পরিবারের আশা এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সত্য সামনে আসবে, এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে—রাজনীতি বা ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে।