Ratan lal Nath News : ত্রিপুরায় কৃষিক্ষেত্রে নতুন উদ্যম যোগ করতে বাধারঘাট পুষ্প উদ্যানে শুরু হলো দু’দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক কমলা উৎসব । বৃহস্পতিবার কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মীনা রানী সরকার এবং বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
এই উৎসবের আয়োজন করেছে রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তর, রাজ্যিক উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র, এগ্রিকালচার রিসার্চ স্টেশন, ত্রিপুরা স্টেট অর্গানিক ফার্মিং ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি সহ কৃষিভিত্তিক আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা। দপ্তরগুলির উন্নয়নমূলক কাজ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি তুলে ধরতে একাধিক প্রদর্শনী স্টলও বসেছে উদ্যানে। সেই সঙ্গে রয়েছে কমলা বিক্রি স্টল ও বিভিন্ন এফবিওদের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী।
এদিনের অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ মুহূর্ত ছিল বাধারঘাট এলাকার নবনির্মিত পুষ্প উদ্যানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন । দীর্ঘদিন জঙ্গলঘেরা পরিত্যক্ত জমি পরিষ্কার করে গড়ে তোলা এই বাগানকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলো। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ন্যূনতম মূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাখা হয়েছে ফ্রি প্রবেশের ব্যবস্থা। সায়েন্স সিটির পাশেই অবস্থিত এই নতুন ফ্লাওয়ার গার্ডেন বছরজুড়ে ১২ মাসই ফুলে ভরপুর থাকবে বলে জানানো হয়।
উদ্বোধনী ভাষণে কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন,
“ত্রিপুরার কমলা উৎপাদন বর্তমানে রাজ্যের গর্ব। কাটিং এখন এতটাই জনপ্রিয় যে কৃষকরা নিজেরাই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উৎপাদনের পরিমাণ এমন যে ভেবে বোঝা যায় না। তাই প্রতিবছরই আমরা কমলা উৎসব আয়োজন করছি।”
তিনি আরও জানান, রাজ্যের সর্বত্র পুরনো কমলা বাগানগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকার প্রতি হেক্টরে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছে, যাতে কৃষকরা নতুন করে চাষ শুরু করতে উৎসাহ পান। কৃষিমন্ত্রীর ভাষায়,
“আমাদের লক্ষ্য একটাই—ঘরে ঘরে রোজগারের সুযোগ তৈরি করা। কৃষি, সংশ্লিষ্ট খাত এবং পর্যটন—এই তিন ক্ষেত্রেই আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস, পশ্চিম জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর সুজিত কুমার দাস, এমআইডিএইচ কনসালটেন্ট গোপাল মল্ল সহ রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
দেশ-বিদেশের কৃষি ও পর্যটন ব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে রতন লাল নাথ জানান, দুবাই ও কেরালায় পর্যটন ও কৃষির সমন্বয়ে উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব, তা তিনি সরেজমিনে দেখেছেন। ত্রিপুরাতেও সেই সম্ভাবনা রয়েছে বলেই তিনি মনে করেন।
প্রায় ১০০ জনেরও বেশি কমলা চাষী এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের উৎপাদিত কমলার প্রদর্শন ও বিক্রির পাশাপাশি আধুনিক চাষপদ্ধতি বিষয়ে পরামর্শসভা ও আলোচনাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দু’দিনের এই কমলা উৎসব কৃষক ও কৃষিপ্রেমীদের কাছে রাজ্যের কৃষি সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।



