Madhabi Biswash News : বিরোধী দলনেতার মাধবী বিশ্বাস কে নিয়ে করা মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বিজেপি দলীয় প্রাক্তন বিধায়িকা মিমি মজুমদার। উনার বক্তব্যে সরকারের দুর্বলতা ভেসে উঠছে। উনি যেই অভিযোগ বা যে বক্তব্য সাংবাদিক সন্মেলনে তুলে ধরেছেন এবং বিরোধী দলনেতা যে বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন দুটো বিষয়েই আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো ।
সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মাধবী বিশ্বাস ও বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী কে নিয়ে প্রাক্তন বিধায়িকা মিমি মজুমদার বেশ কিছু উক্তি করেছেন। উনি উনার বক্তব্যে বলছেন, বিরোধী দলনেতা নাকি বলেছেন যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে মাধবী বিশ্বাস জন্ম নেবেন। আদৌ উনি একথা বলেছেন কিনা সেটা উনার বক্তব্য শুনলেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
প্রকৃত অর্থে জিতেন বাবু উনার বক্তব্যে মাধবী বিশ্বাস এর অশালীন ভাষা প্রয়োগের বিষয় টি কে সম্পূর্ণ ভাবেই নিন্দা জানিয়েছেন। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর তুলে ধরা প্রশ্ন গুলোর এবং মাধবী বিশ্বাস এর সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গ টেনেই উনি বলেন আগামী দিনে মাধবী বিশ্বাস এর মতো সাহসিকতা নিয়ে প্রতি ঘর থেকে মানুষ বেড়িয়ে আসবেন। কিন্তু উনার এই কথার সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রমি ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিধায়িকা মিমি মজুমদার।
প্রাক্তন বিধায়িকা মিমি মজুমদার এর বক্তব্য, মাধবী বিশ্বাস অশালীন পোষাকে, অশালীন ভাষা ব্যবহার করে অশ্লীল কার্যকলাপ এর জন্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। আমরা মোটেও এই বিষয় টিকে সমর্থন করছি না।
কিন্তু উনার উদ্দেশ্যে আমাদের একটি প্রশ্ন ? এই অশ্লীলতা কি মিমি মজুমদার এই প্রথম বার দেখেছেন ? উনি কি ভুলে গেছেন , ২০২৩ সালের ৭ই জুলাই বাগবাসার চর্চিত বিধায়ক যাদব লাল নাথের কাণ্ড কারখানা ? যিনি কিনা পবিত্র বিধানসভা অধিবেশনে বসে আপন মনে নীল ছবি উপভোগ করছিলেন ? সেটা কি অশালীন ছিল না ? স্মার্ট ফোন দেখে সুব সমাজ যাদব লাল নাথের এই কাণ্ড দেখে কি শিখবে না কিছু ? এখন তো সবার হাতেই স্মার্ট ফোন আছে। শাসক দলের বহু বিধায়ক , সাংসদ মঞ্চে দাঁড়িয়ে অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন , সেগুলো কি মিমি দেবীর চোখে পড়ছে না ?
এত কিছুর পরেও যাদব বাবু কে বরখাস্ত করেনি বিজেপি দল।
বিজেপি দলের একজন সাংসদ , যিনি কিনা আবার অভিনেত্রী। কঙ্গনা রানাউত, উনি সাংসদ হয়েও এখন যেধরণের পোশাক পরিধান করে ফটো শুট করান , সেটা কি একজন সাংসদ এর ক্ষেত্রে অশালীন নয় ? নাকি বিজেপি দলে অভিনেত্রীরা সাংসদ হলেও অশ্লীলতা করার অধিকার রাখে ? এদিকে মাধবী বিশ্বাস এর অশালিনতা চোখে পরতেই ইমিডিয়েট এক্সান। তবে কারণ কি শুধুই অশালিনতা ? মোটেও নয়।
রাজ্য বাসী বিগত ২ মাস যাবত মাধবির পোস্ট করা ভিডিও গুলো দেখছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাধবীর পোস্ট করা ভিডিও গুলিতে রাজ্য সরকারের জরাজীর্ণতাঁর প্রশ্ন উঠে এসেছে। ভীষণ ডকুমেন্ট এর প্রসঙ্গ, ১০৩২৩, বেকারত্ব সমস্যা, স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা, শিক্ষা ব্যবস্থার অধঃপতনের মতো বিষয়, আগরতলা শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ার বিষয় গুলোই ছিল তাঁর আলোচনার অঙ্গ।
আর এই প্রশ্ন গুলো উঠতেই ভীত নড়বড়ে হয়ে যায় শাসক গোষ্ঠীর। তাই যেন তেন প্রকারে মাধবী কে দমাতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ। কারণ, মাধবী কে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামী দিনে যদি মানুষ এভাবেই সরকারের দুর্বলতার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন তাহলে আগামী দিনে এ রাজ্যে বিজেপির সাম্রাজ্য ভেঙ্গে চুরে গুড়িয়ে যাবে। এটা বুঝতে পেরেই পুলিশ কে দিয়ে মাধবী কে গ্রেফতার। আর এমনটাই নিজের বক্তব্যে বার বার প্রকাশ করেছেন বিরোধীরা।
বিলোনিয়ায় একজন রাষ্ট্র পতি কালারস প্রাপ্ত ওসি কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রাষ্ট্র বাদী দলের চুনোপুঁটি নেতারা ৪৮ ঘণ্টার আগেই জামিন পেয়ে যায়। শান্তির বাজার কাণ্ডে দোষীরা এখনো বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেরায়। তাদের কে সরকার বাগে আনতে ব্যর্থ। এদিকে মাধবী দের মতো সাধারণ মানুষ কে আঁটকে তাদের বাক স্বাধীনতা কে রুদ্ধ করে দিয়ে নিজের দুর্বলতা কে আরও ভালো করে ফুটিয়ে তুলেছেন।
অন্যদিকে প্রাক্তন বিধায়িকা মিমি মজুমদার দের মতো একটা অংশ প্রকাশ্যে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য কে ঘুড়িয়ে পেচিয়ে জন সমক্ষে প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছেন। এমনটাই বলছেন বিরোধীরা। সরকার কে নিয়ে মাধবী যে প্রশ তুলেছেন , সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় , তাও সূর্যাস্তের পর। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর পক্ষের আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মণ।
মাধবী বিশ্বাস এর তুলে ধরা প্রশ্ন গুলো কি অনৈতিক ছিল ? অশালীন ছিল ? রাজ্যের নাগরিক হিসেবে মাধবীর করা প্রশ্ন গুলো কি আপনাদের মনে জাগে ? জানান কমেন্টে।



