Kharchi Puja 2024
হাতে গোনা আর মাত্র দু দিন। তার পরেই হৈহৈ করে রাজ্যের সর্ব অংশ থেকে ছুটে আসবেন ভক্তরা। পথ ঘাট ভরে যাবে জনসমাগমে। আবারো বছর ঘুরে পুরাতন আগরতলায় জমবে মিলন মেলা। বিগত বছরে ভারী বৃষ্টিপাতে যা কিছু অপূর্ণ রয়ে গেছে সমস্ত টা যেন এবার পূরণ হয় সেই প্রার্থনা করছেন সকলেই। আর তার সাথেই আজ শুরু হয়ে গেছে খারচি পুজোর প্রাপ নিয়মাবলী। সকাল থেকে সেই ব্যস্ততাই চোখে পড়লো খয়েরপুর স্থিত চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে।
খারচি পুজো ত্রিপুরার বাঙ্গালী ও ত্রিপুরী দের যৌথ উৎসব। যদিও টি ত্রিপুরীদের প্রধান উৎসব বলেই বিবেচিত। বলা হয় রাজন্য আমলে ত্রিপুরার রাজবংশের কূল দেবতা ছিলেন এই চতুর্দশ দেবতা বা চৌদ্দ জন দেব দেবী। তাদের নাম যথাক্রমে হর, উমা, হরি, মা, বাণী, কুমার, গনপা, বিধি , ক্ষবা, অব্ধি, ভাগীরথী, শিখি , কামদেব, হিমাদ্রি। এদের প্রত্যেকেরই আবার ককবরক ভাষায় আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এই চতুর্দশ দেবতাদের কেবলমাত্র মুণ্ড টি পূজিত হয়। এর কোনো দেহ নেই। যুগ যুগ ধরে পুরাতন আগরতলা তথা খয়েরপুর স্থিত চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে এদের পূজা হয়ে আসছে।
এবারেও মহা সমারোহে খারচি পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে মন্দির প্রাঙ্গনে। শুরু হয়ে গেছে খার্চি পূজার আচার-অনুষ্ঠান। প্রথা অনুযায়ী খারচি পুজোর দুদিন আগে থেকেই বিভিন্ন রীতি নীতি মেনে পূজার্চনা করা হয়। সেই অনুযায়ী আজ প্রথমদিন সম্পন্ন হল ‘জারি পূজা’। ত্রিপুরিদের দ্বারা বছরের এই জুলাই আগস্ট মাসের সময় প্রতি বছর খারচি পূজার আয়োজন হয়ে থাকে । তাছাড়া অম্বুবাচীর পর এই ধরিত্রী অপবিত্র হয়ে যায় বলে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বাসিন্দা ত্রিপুরিদের মধ্যে একটি মান্যতা রয়েছে। এই খারচি পূজার মধ্যে দিয়ে ধরিত্রী কে পুনঃপবিত্র করে তুলেতেই নাকি এই খারচি পুজো করা হয়। আগামী রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে খারচি পূজা। তার আগে জারি পুজোর মধ্যে দিয়ে আজ থেকে খারচি পুজোর নানা নিয়মাবলী শুরু হয়েছে। জারি পুজো তে বিভিন্ন পাতা ফুল দিয়ে ভেলার মতো বানিয়ে এই পূজা হয়। এই পুজোর পর পুরোহিতেরা জল পান করেন। এমনটাই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মন্দিরের চন্তাই বা পুরোহিত।
আর দুদিন বাদে সকাল বেলা চতুর্দশ দেবতা কে গঙ্গা স্নান করিয়েই পূজা হবে। মন্দির প্রাঙ্গনে ভক্তদের অগণিত ভিড় চোখে পড়বে। তার সাথে জমজমাট ৭ দিন চলবে বিশাল মেলা।