পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রীর ষড়যন্ত্রের বলি স্বামী ঝুটন

এ যুগে শুধু নারী কেন, পুরুষেরাও সমান তালে নির্যাতনের শিকার। গার্হস্থ্য হিংসা কিংবা পরকীয়ার মতো ঘটনার বলি শুধু মহিলারাই নন, পুরুষেরা ও এধরণের সমাজবিরোধী ঘটনার জেরে অকালে প্রাণ হারান। আর এমনই এক ঘটনার জেরে শ্বশুর বাড়িতে মধ্য রাতে চরম নির্যাতিত হয়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন জনৈক স্বামী।

শ্বশুরবাড়িতে পরিকল্পিতভাবে মারধর করে খুন করা হয় জামাই কে । জানা গেছে আমতলী থানার অন্তর্গত ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাগমারা কলোনী এলাকার ঝুটন সরকার গত সাত আট বছর আগে একই এলাকার অজয় সরকারের মেয়ে মাম্পি সরকারকে সামাজিকভাবে বিয়ে করেছিল। বিয়ের পর তাদের ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান জন্মবার পর তাদের দুজনের মধ্যে ছোটখাটো কোন ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি হত। তারপর ঝুটন সরকারের স্ত্রী মাম্পি সরকার জড়িয়ে পড়ে পরকীয়া প্রেমে। সেই পরকীয়া প্রেমের জেরে গত তিন বছর আগে মাম্পি সরকার ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। অন্যদিকে ঝুটন সরকার তার একমাত্র পুত্র সন্তানকে দেখতে প্রায়ই শ্বশুরবাড়িতে যেত। এরই মধ্যে গত রবিবার গভীর রাতে ঝোটন সরকারের শালীর জামাই মনির দেবনাথ, ঝুটনকে তার শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।এরপর তার স্ত্রী মাম্পি সরকার এবং শাশুড়ি শেফালী সরকারের ইশারায় মনির দেবনাথ সহ তার বন্ধু মিলে বেধরকভাবে মারধর করে ঝুটন কে মাটিতে ফেলে রাখে।
এই খবর পেয়ে ঝুটন সরকারের বড় ভাইসহ বেশ কয়েকজন মিলে প্রথমে হাঁপানিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। আর সেখানেই আজ ভোরে মৃত্যু হয় ঝুটনের।
এদিকে ঘটনার দিনই অভিযুক্ত মনীর দেবনাথ অর্থাৎ মৃতের শালিকার জামাইকে আমতলী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে জেল হেফাজতে রয়েছে বলে ও জানা গেছে। ঝুটন সরকারের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ বুধবার দুপুরে একটি খুনের মামলা নথিভুক্ত করে। ঝুটন সরকারের মৃতদেহ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে তার পরিবারের লোকজন সহ আত্মীয়-স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
এদিকে বুধবার বিকেলে ঝুটন সরকারের স্ত্রী মাম্পি সরকার এবং তার শশুর অজয় সরকার আমতলী থানায় আসলে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয় এবং সেদিনই তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এধরণের ঘটনা ও সমাজের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে নির্যাতন উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান ভাবে অপরাধ যোগ্য ঘটনা। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তো আমরা সব সময়ই কথা বলি। কিন্তু নির্যাতনের শিকার বহু পুরুষ এর জীবনাবসান এভাবেই হয়ে যায়। কিন্তু তার হয়ে প্রতিবাদ আজো অনেকেই করে না কিংবা অনেক ঘটনা প্রকাশ্যেই আসেনা। এই অবস্থায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবার আগেই নারী কিংবা পুরুষ উভয়ের উচিৎ প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া। এতে করে হয়তো আগামী দিনে বহু প্রাণ বেঁচে যাবে।

Leave A Reply