Durga Prasanna
হিম হয়ে যাওয়া খুন কাণ্ডে শিহরিত হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্যের মানুষ। দিনটি ছিল ৩০শে এপ্রিল। রাত আনুমানিক ১১.৩০ মিনিটে গোটা নেট দুনিয়া এবং খবরের চ্যানেলে ছিল একটাই খবর।
“খুন হয়েছেন ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক দুর্গা প্রসন্ন!”
হইচই পরে যায় সর্বত্র। কান্নায় ভেঙ্গে পরা দুর্গা প্রসন্নের পরিবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাইরে বসে হাহাকার করছিলেন। স্বামী হারা স্ত্রী বুলটি দেবী চিৎকার করে বলেছিলেন ৭ জনের নাম। যারা হত্যা করেছে দুর্গা কে , দাবী করে ছিলেন তিনি। সেই ঘটনার পরপর এনসিসি থানায় মামলা করেন তিনি ৭ জনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে প্রাইম সাস্পেক্ট ছিল “রাজু বর্মণ” । দীর্ঘ দু মাস ব্যাপি এই মামলার তদন্ত চলে। তৈরি হয় একটি স্পেশাল তদন্তকারী টিম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতা আমলা সকলেই দুর্গা প্রসন্ন উরফে ভিক্কির হত্যাকারীদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি পাইয়ে দেবার আশ্বাস দেন।
কিছুদিন দুর্গা প্রসন্নের হত্যাকাণ্ড এর তদন্ত নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত আপডেট আসতে থাকলেও মাঝখানে লোকসভা নির্বাচন এর কারণে বেশ কিছুটা সময় সব কিছু যেন স্তব্ধ হয়ে পরে। পুলিশ কি তবে জল ঘোলা করছে শুধু ? নির্বাচনের অজুহাতে দুর্গার হত্যাকারী কে আড়ালে আবডালে সহযোগিতা করছিলো না তো পুলিশ? নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল জনমনে।
কিন্তু আবারো চর্চার শুরু হয়েছে। কারণ সবার আড়ালে নিজেদের মতোই নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো পুলিশের স্পেশাল টিম। আর তার জেরেই সুদূর গৌহাটি থেকে দুর্গা প্রসন্নের হত্যাকাণ্ডের প্রাইম সাস্পেক্ট রাজু বর্মণ কে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। গতকাল তথা বুধবার তাঁকে গৌহাটি তে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে গৌহাটি থেকে বিমান যোগে নিয়ে আসা হয়েছে আগরতলায়।
আগরতলা বিমান বন্দরে পৌছাতেই ভিক্কির অনুগামী, বন্ধু, আপন জনেরা বাইরে থেকে চিৎকার শুরু করতে থাকে। নিজের ঘনিষ্ঠ দুর্গা তথা ভিক্কির মৃত্যুর পেছনে যে কালপ্রিটের কারসাজী, তাঁকে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে যেন রক্ত মাথায় উঠে যাবার উপক্রম হয়েছে তাদের।
অবশেষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এনসিসি থানায়। সেখান থেকে সমস্ত কারবাহি শেষ করে তাঁকে কোর্টে তোলা হবে রিমান্ড চেয়ে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। দেখার বিষয় হচ্ছে এতো বড় রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটাবার পাছনে মূল দোষী সাব্যস্ত করে রাজু বর্মণ কে আদালত কি শাস্তি দেয় ! আদৌ দুর্গার অপরাধীরা সকলে চূড়ান্ত শাস্তি পায় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে আছে তার পরিবার পরিজন।