Cpim joining : বিজেপি, মথা কিছুতেই ভরসা নেই। শেষ ভরসা বামেতেই

পদ্ম, আনারস, দা কোনো চিহ্নেই নেই ভরসা। ভরসা একমাত্র শ্রমিক এর স্বার্থে লড়াই করে যাওয়া কাস্তে হাতুড়ি চিহ্নেই। আর এই থিয়োরি অনুসরণ করেই শাসক শিবির ছেড়ে বহু ভোটার হাতে তুলে নিলো লাল ঝাণ্ডা।
গোটা দেশে এই মুহূর্তে ভোটের আবহ। ১৯শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে নির্বাচন। দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন এর দিন ক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে ততই উদ্বেগ বাড়ছে শাসক বিরোধী উভয় পক্ষের নেতা নেত্রীদের মধ্যেই। পদ্ম শিবির যেমন আপাদমস্তক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পুনরায় ক্ষমতায় আসার, তেমনি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট মঞ্চ ও গনতন্ত্র বাঁচানোর আহ্বান রেখে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিন্দু মাত্র পিছপা হচ্ছে না। দেশের মধ্যে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য গুলো লোকসভা নির্বাচনে কিরুপ ফলাফল করবে সেদিকে কম বেশি সবারই নজর রয়েছে। আর সেই মোতাবেক, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের দুটি আসনেই বিজেপি নিজেদের প্রার্থীদের জয়ী করাবার লক্ষ্যে দিন রাত এক করে প্রচার অভিযান চালাতে ব্যস্ত। বিরোধী ইন্ডিয়া জোট ও থেমে নেই। দিকে দিকে নিজেদের প্রার্থীদের সমর্থনে জোর প্রচার চলছে। এমতাবস্থায়, ভোটের নির্ঘণ্ট যেখানে ঘোষিত সেই মুহূর্তে বিজেপি কিংবা আইপিএফটি বা মথা ছেড়ে বিরোধী শিবিরে শামিল হওয়া দলের কাছে একটা বাড়তি পাওনা এবং উল্লাসের সংবাদ ও বটে। এতে করে যে মানুষের আস্থা এখনো বিরোধী শিবিরের উপর টিকে আছে তার কিছুটা হলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে শাসক দলের দিকেই যোগদানের মাত্রা বৃদ্ধি হতে দেখা যাবে এটাই স্বাভাবিক। আর হচ্ছে ও তাই। বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ স্থাপন করতে গিয়ে কিংবা জনসভায় নিজেদের বক্তৃতার মাধুর্যে বহু ভোটার কে দলে টানতে সফল হচ্ছে বিজেপি। তবে এই অবস্থায় ঝড়ের বিপরীতেও অগ্রসর হতে দেখা যাচ্ছে বহু ভোটারদের। ঠিক একই চিত্র উঠে এসেছে ত্রিপুরার করবুক বিধানসভা কেন্দ্রে।
পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনের অন্তর্গত করবুক প্রধানত তপশিলি উপজাতিদের জন্যে সংরক্ষিত এলাকা। ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের সময় সিপিআইএম এর প্রার্থী কে হাড়িয়ে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করে বিজেপি মনোনীত প্রার্থী বুর্বমোহন ত্রিপুরা।
২০২৩ এর নির্বাচনের আগে রাজ্যে যখন তিপ্রা মথা নামক দল এর উদ্ভব ঘটে তখন রাজ্যের উপজাতি অংশের বিরাট সংখ্যক ভোটার মথার অংশীদার হয়ে উঠে। করবুক থেকেও বহু ভোটার তিপ্রা মথার তিপ্রা ল্যান্ডের ফাঁদে পা দিয়ে ২০২৩ এর নির্বাচনে দল কে অভূতপূর্ব ফলাফল করতে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু তাদের মধ্যেই একটা অংশ বর্তমানে তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। মাস খানেক আগে বিজেপি শিবিরে মিশে যাওয়ার পর থেকে তিপ্রা মথার জনপ্রিয়তা রাজ্যের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন জনজাতি মানুষের মধ্যে থেকে কমে যেতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বললেও ভুল হবে না। আর তাই বহু ভোটার এখন বিজেপি কিংবা মথা নয়, বরং ভরসা করছেন বিরোধী শিবিরের দিকেই।
আর তাই আজ শনিবার করবুকে তিপ্রা মথা ও IPFT ছাড়লেন ৪৯ জন ভোটার। হাতে তুলে নিলেন লালঝান্ডা। ইনক্লাব জিন্দাবাদ শ্লোগানে মিশে গেলেন তারা। ইন্ডিয়া জোট মঞ্চ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করুক বা না করুক, তবে ত্রিপুরার রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০২৩-২০২৪ দুটি বছর স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যেখানে রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চের নানা রূপ নানা প্রদর্শনী উপভোগ করেছে রাজ্য ও বহিঃ রাজ্যের সকলেই। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের জনজাতিদের মধ্যে যে ভাবনার পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে তা আগামীতে তাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালণ করবে বলেই আশা করা যায়।
তিপ্রা মথা ও বিজেপির জোট কে যে জনজাতি অংশের মানুষ খুব একটা পছন্দ করছেন এমনটা নয়। আর তার প্রকাশ ঘটতে দেখা যাচ্ছে ক্রমেই।

Leave A Reply