CM Agartala Town Hall : ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী—দেশপ্রেম, নীতিনিষ্ঠা ও রাষ্ট্রচিন্তার এক উজ্জ্বল প্রতীক। তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় আগরতলার মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণা দেন, যা আগরতলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন বলে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি জানান, আগরতলা টাউন হলের নাম পরিবর্তন করে তা “ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী টাউন হল” নামে পুনঃনামকরণ করা হবে। পাশাপাশি, সেই টাউন হল প্রাঙ্গণেই ড. মুখার্জীর একটি মর্মর মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর রাজনৈতিক জীবন এবং রাষ্ট্রগঠনে অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,
ড. মুখার্জীর জীবনদর্শন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি আদর্শ। তাঁর মতো নেতা দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ এবং যুক্তিনির্ভর রাজনীতির প্রতীক। তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এই সিদ্ধান্ত তাঁর স্মৃতিকে চিরন্তন করে তুলবে।
আগরতলা টাউন হল শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি শহরের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল। এই স্থানের নাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কেবল একজন নেতার প্রতি সম্মানই জানানো হচ্ছে না, বরং নাগরিকদের মধ্যে ইতিহাস, উত্তরাধিকার এবং গর্বের অনুভূতি আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো, নতুন প্রজন্মকে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর অবদান সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাঁর আদর্শের সঙ্গে পরিচয় ঘটানো। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনসংঘ, যা পরবর্তীকালে ভারতীয় জনতা পার্টির ভিত্তি তৈরি করে, আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
এই দিনটি স্মরণীয় করে তুলতে অনুষ্ঠানে গান, কবিতা, বক্তৃতা ও আলোচনাচক্রের মাধ্যমে ড. মুখার্জীর জীবন ও দর্শনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, ছাত্রছাত্রী ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয় একটি বিশেষ তথ্যচিত্র, যাতে তুলে ধরা হয় ড. মুখার্জীর ছাত্রজীবন, কাশ্মীর বিষয়ে অবস্থান, এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা।
অতীতের প্রতি শ্রদ্ধা, ভবিষ্যতের প্রতি দায়িত্ব
ত্রিপুরা সরকারের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র একটি নাম পরিবর্তনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি ইতিহাসের এক প্রজ্ঞাবান অধ্যায়কে নতুন করে জনমানসে প্রতিষ্ঠার একটি প্রয়াস। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মতো নেতার আদর্শ ও চিন্তাধারাকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার এই উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চায়।



