BJPs poli-religious campaign shocks everyone
বিজেপি যে ক্রমাগতই দেশের কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করছে তা বুঝতে কারোর বাকি নেই। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে তড়িঘড়ি অযোধ্যায় অর্ধনির্মিত রাম মন্দির উদ্বোধন তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। এছাড়া ও প্রতিনিয়তই দেশ কে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং সিএএ ও এনআরসি চালুর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো ইসলামিক দেশ থেকে আগত মুসলমানদের ভারত থেকে বিতারিত করার কূটনীতি শিক্ষিত সমাজ কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে।
এবার এমনই ধর্মীয় ভাবাবেগ কে হাতিয়ার করে লোকসভায় ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চাইছে বিজেপি। দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দু রাষ্ট্রের নীতি কে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে গিয়ে আজ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ঈদের উৎসবে ৬ আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন পথে হিন্দু দেবতার আদলে দুজন কে সাজিয়ে নিয়ে পশ্চিম আসনের প্রার্থীর প্রচারে বেড়িয়ে পড়লেন বিজেপির কর্মীরা।
রাজ্যের ৪২ লক্ষ জনবসতি এবং ২৮ লক্ষ ভোটারদের মধ্যে সংখ্যালঘু হলেও একটা ভালো অংশের ইসলাম ধর্মাবলম্বী ভোটার রয়েছেন। তাছারাও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার ভোটার রয়েছেন যারা এই রাজ্যের প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তবে শুধু মাত্র হিন্দু দেব দেবীদের নিয়ে বিজেপির এহেন প্রচার কেন? এতে কি অন্য ধর্মাবলম্বীদের হৃদয়ে কুঠারাঘাত করা হচ্ছে না?
তার চাইতে ও বড় করা , ধর্ম নিয়ে কিসের রাজনীতি? একটি নির্দিষ্ট ধর্ম কে হাতিয়ার করে নিত্যদিন ভোটারদের এক প্রকার ব্রেইন ওয়াশিং চলছে গোটা দেশ জুড়ে। সাধারণ মানুষ এমন একটি সরকারের প্রত্যাশা করে যা তাদের খাদ্য, জল, বাসস্থান সর্বোপরি কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা দিতে পাড়ার মতো ক্ষমতা রাখে। আর এই সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাম মন্দির নির্মাণ এবং মোদীর জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের প্রচারের নামে স্থানে স্থানে শুধু বড় বড় পোস্টার লাগানো ছাড়া কিই বা করছে বিজেপি? শুধু বিরোধী রাই নয়, দেশের একটা বিরাট অংশের সজাগ ভোটাররা নিত্যদিন এই বিষয় গুলো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়ে চলেছেন।
এদিন ৬ আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে আয়োজিত এই রেলি তে দুজন কে মহাদেব ও রাম সাজিয়ে প্রচারে শামিল করার বিষয় কে কেন্দ্র করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস শিবির। “রাম কে নিয়ে রাজনীতি নয়” বলে সুদীপ রায় বর্মণ জানিয়ে দিয়েছেন ভগবান কে নিয়ে যেন রাজনীতি না করা হয়।
অর্থাভাবে , অনাহারে, অর্ধাহারে যেখানে নিত্যদিন মধ্যবিত্ত ভোগান্তির শিকার সেখানে ধর্মের নামে শ্লোগান দেওয়ার কোনো মানে হয়না বলেও সচেতন ভোটাররা মনে করেন। ধর্মীয় ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করে ভোটের বৈতরণী পার হওয়াটা এতটা সোজা হবে না এই যাত্রায়, ভারতের বর্তমান আবহাওয়া কিছুটা এমনই আভাস দিচ্ছে।