Baromura Local market

ত্রিপুরা রাজ্য বরাবরই এর প্রাকৃতিক মহিমা এবং এখানকার মিশ্র জন বসতির জন্যে প্রসিদ্ধ। বাঙ্গালী ছাড়াও আরও প্রায় ১৯টি জনজাতি সম্প্রদায়ের বসবাস এই রাজ্যে। আয়তনে ছোট হতে পারে। কিন্তু এখানে বিচিত্র উপলব্ধি হবে বিশাল মাত্রায়।
ত্রিপুরার বাঙ্গালী এবং জনজাতি উভয়েই মিলেমিশে বসবাস করলেও পাহাড়ের অঞ্চল গুলিতে জনজাতিদেরই ঘন বসতি রয়েছে। আদি কালে ত্রিপুরায় যখন বসবাস যোগ্য জায়গা বেছে নিতে উভয় গোষ্ঠী কেই সুযোগ দেওয়া হয় তখন পাহাড়ের বুকেই বেঁচে থাকাকে বেছে নিয়েছিলেন জনজাতিরা। সেই থেকে পর পর তাদের প্রজন্ম এই পাহাড়ের বুকেই চাষ বাস করছেন, বেঁচে আছেন।
ত্রিপুরার বিশাল মাপের পাহাড় গুলোর মধ্যে অন্য তম একটি হচ্ছে বড়মুড়া পাহাড়। আগরতলা থেকে ৩৫ কিমি দূরত্বে এই পাহাড়ের অবস্থান । যা এদিকে শহর আগরতলার সাথে ওদিকে তেলিয়ামুড়া মহকুমা কে সংযুক্ত করছে। তাঁর চাইতে বড় কথা এই সড়ক পথ আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক পথ বলে বিবেচিত যার মধ্যে দিয়ে নিত্যদিন বহিঃ রাজ্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করছে ত্রিপুরার বানিজ্য।
বড়মুড়া পাহাড়ে জনজাতিদের বসতির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় বর্তমানে কিছুটা বেড়েছে। এখানেই পাহাড়ে তাদের প্রধান চাষ জুম সহ অন্যান্য শাক সব্জির চাষ ও হয়ে থাকে। বিশেষ করে পাহাড়ে কলা বাগান, লেবু, আম, সুপারি, বনের বিভিন্ন ভোজ্য ফল মূল ও এদের উপার্জনের মূল রসদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Baromura Local market
বড়মুড়া পাহাড় এর মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া ৪৪ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশ ধরেই দেখা যায় জনজাতিদের ছোট ছোট বাজার। যেখানে স্থানীয় উৎপাদিত ফল মুলাদি নিয়ে তারা বসেন দু পয়সা রোজগারের উদ্দেশ্যে।
বিশেষ করে যে সমস্ত শাক সবজি এই বাজার গুলোতে পাওয়া যায় তাঁর মধ্যে রয়েছে, লেবু , ঢেঁকির শাক, বাগের ডগা, সুপারি, মিষ্টি আলু, এছাড়া শামুক ও পাওয়া যায় এখানে। তাছাড়া জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যে আরও একটি বাণিজ্যের উপাদান হচ্ছে বাঁশ। বাঁশ ত্রিপুরার মানুষের জন্যে শুধু উপার্জনের মাধ্যম হিসেবেই নয়, বরং ত্রিপুরার ঐতিহ্য কেউ ধরে রেখেছে বলে মনে করা হয়। এই বাঁশ বেত দিয়ে বিভিন্ন ঝাকি, চারি, কিংবা চালন বানিয়ে সেগুলো বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করেন জনজাতিরা।
জীবন নির্বাহে বহুলাংশে কষ্ট করতে হয় বটে তাদের। তবু প্রকৃতির মাঝে বেঁচে থাকাতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। যদিও সময়ের সাথে সাথে এখন আর সেই স্বাচ্ছন্দ্য নেই। নানা সমস্যায় জর্জরিত এই পাহাড়ের জনগনেরা ও চায় এখন সুযোগ সুবিধা। কিছু পূরণ হলেও, কিছু থেকে যায় খামতি। ব্যাস, এভাবেই চলছে তাদের জীবন।

Leave A Reply