Trinamool Congress News : ত্রিপুরায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে এখনও পর্যন্ত এসআইআর ঘোষণা করা হয়নি। তবুও রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় জন্মসনদ, ঠিকানার প্রমাণপত্র এবং অন্যান্য পরিচয়সংক্রান্ত নথি দেখানোর নাম করে বাঙালি সম্প্রদায়ের মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে—এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শান্তনু সাহা। বুধবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।
শান্তনু সাহার দাবি, নির্বাচন কমিশন কোনও নির্দেশ না দেওয়া সত্ত্বেও বিজেপির কর্মীরা গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সাধারণ মানুষের কাছে নানা কাগজপত্র চাইছে। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে বিশেষত সংখ্যালঘু ও বাঙালি ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে। তাঁর বক্তব্য, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই কাউকে বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। স্পষ্টতই বাঙালিদের টার্গেট করার চেষ্টা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা না নেওয়ায় অসহায়ত্ব ও বিভ্রান্তি বাড়ছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, এটি কেবল কাগজপত্র পরীক্ষার নামে দুরভিসন্ধিমূলক চাপ তৈরি করা এবং সাধারণ মানুষের মনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা। পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে রাজনৈতিক আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছিল, একই কৌশল ত্রিপুরায় প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে যুব তৃণমূল কংগ্রেস আগামী ২৬ নভেম্বর সার্কিট হাউসের সামনে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দুই ঘণ্টার গণ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। শান্তনু সাহার বক্তব্য অনুযায়ী, এই অবস্থানের মূল দাবি হবে—
- জন্মসনদসহ নথিপত্র দেখানোর নামে হয়রানি বন্ধ
- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
- প্রশাসনিক জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা
- মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের সুরক্ষা
তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করার এই প্রচেষ্টা যদি দ্রুত বন্ধ না হয়, তৃণমূল আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবে।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে এই অভিযোগ নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, এবং আগামী দিনগুলোতে বিষয়টি আরও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ত্রিপুরায় এসআইআর ঘোষণা না থাকা সত্ত্বেও কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে বাঙালি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে যে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে, তা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। যুব তৃণমূলের দাবি—এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আগামী ২৬ নভেম্বরের গণ অবস্থানের মাধ্যমে বিরোধী দল সাধারণ মানুষের উদ্বেগ এবং ক্ষোভকে সামনে আনতে চাইছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা কতটা প্রশমিত হয়।



