Udaipur Tripura News : কাকড়াবন বাজারের গলিঘুঁজিতে এখন আতঙ্কের ছায়া। সুশাসনের দাবি করা বিজেপি সরকারের রাজ্যে সাধারণ মানুষের জমি কেনা আজ জীবনবিপন্ন ঝুঁকির সমান।
কাকড়াবনের মিষ্টি ব্যবসায়ী লক্ষণ সাহা সম্প্রতি জমি ক্রয় করেছিলেন। আর সেই অপরাধেই এলাকার তথাকথিত রাষ্ট্রবাদী জমি মাফিয়াদের হাতে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলেন তিনি।
জমি কিনলেই দিতে হবে মোটা অঙ্কের দক্ষিণা—এ যেন বিজেপি শাসিত অঞ্চলের অলিখিত আইন! লক্ষণ সাহার কাছে দাবি করা হয় এক লক্ষ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁর উপর হামলে পড়ে বাবুল দেব, জামাল মিরদা, রাজেশ সরকার, নিখিল সাহা ও নারায়ণ সাহা—এদের বেশ কয়েকজনের নাম স্থানীয় স্তরে বিজেপির সঙ্গে জড়িত বলেই পরিচিত।
ব্যবসায়ীর দোকানে ঢুকে রড, লোহার পাইপ, কাঠের টুকরো দিয়ে যে নৃশংস আক্রমণ চালানো হয়েছে, তা শুধু আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতাই নয়—এটি সরকারের নীরব সমর্থনে বেড়ে ওঠা গুন্ডারাজের স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। প্রাণ বাঁচাতে থানায় ছুটে আশ্রয় নেওয়া—এটাই আজকের নিরাপত্তাহীন বাস্তবচিত্র।
বিজেপি সরকার যতই উন্নয়ন, স্বচ্ছতা, সুশাসনের বুলি আওড়াক, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতার ছত্রছায়ায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যদি সাধারণ মানুষের জমি রক্ষায় ব্যর্থ হয়, আর বরং দলীয় দাদাদের আধিপত্যকে প্রশ্রয় দেয়, তবে তা গণতন্ত্র নয়—স্পষ্ট গুন্ডাতন্ত্র
বর্তমানে গুরুতরভাবে আহত লক্ষণ সাহা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অথচ এত বড় ঘটনার পরও সরকারি প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে—মাফিয়াদের গ্রেপ্তার কি হবে? নাকি আবারও ক্ষমতাসীন দলের দূর্গন্ধ রাজনীতি আইনের উপরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে?
একটির পর একটি ঘটনা প্রমাণ করছে—বিজেপি সরকারের সুশাসন আসলে মাফিয়াদের পাল্টা নামমাত্র সুরক্ষা বলয়। জনগণ এখন প্রশ্ন করতে শুরু করেছে—এ রাজ্যে বাঁচতে হলে কি আগে দলীয় ক্যাডারদের কাছে দক্ষিণা জমা দিতে হবে?
কাকড়াবন বাজারের এই নৃশংস ঘটনা আরেকবার প্রমাণ করল—বিজেপি সরকারের সুশাসনের দাবির আড়ালে লুকিয়ে আছে ভয়াবহ প্রশাসনিক উদাসীনতা ও দলীয় দাদাগিরির বেআইনি দাপট। সাধারণ মানুষের জমি কেনা-বেচার মতো নিত্যদিনের আর্থিক কার্যকলাপও আজ জীবনের ঝুঁকি বয়ে আনছে।
একদিকে সরকার দুর্নীতি, স্বচ্ছতা ও আইনশৃঙ্খলার বড়াই করছে, অন্যদিকে ক্ষমতার ছায়ায় পালিত মাফিয়ারা প্রকাশ্যে হামলা চালালেও প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব।



