Kanchanmala News : নিত্য লাল পালের করুণ অসুস্থতার ঘটনা ঘিরে পুরো কাঞ্চনমালা এলাকায় এখন চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার পরিবেশ। এলাকার দুই নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এই হতদরিদ্র ব্যক্তিটি গত এক মাস ধরে এক অজানা, ভয়াবহ ও দুরারোগ্য সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিত্য লাল পাল আগে একটি জর্দা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। সামান্য আয়েই কোনো রকমে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু গত এক মাস ধরে অচেনা এই রোগ তাঁকে এতটাই দুর্বল করে ফেলেছে যে কাজে যাওয়া তো দূরের কথা, তিনি আর ঘরের বাইরে বের হতেও সাহস পাচ্ছেন না।
নিত্য লালের রোগের লক্ষণ দেখে এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, কয়েক সপ্তাহ আগে শরীরে অস্বাভাবিক চুলকানি এবং চামড়া ফেটে গিয়ে ক্ষত তৈরি হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সেই ক্ষত গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
এখন অবস্থার এমন পর্যায় যে তাঁর ত্বক জায়গায় জায়গায় উঠে যাচ্ছে এবং ব্যথায় তিনি প্রায় অচল হয়ে পড়েছেন। অনেকেই প্রথমে রোগটিকে কুষ্ঠর মতো বলে মনে করলেও চিকিৎসকরা এখনও সঠিকভাবে কোনো রোগ নির্ণয় করতে পারেননি।
নিত্য লাল জানান, তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। কয়েকদিন ওষুধ খেয়েও কোনো উন্নতি হয়নি, বরং দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। বাড়ির বাইরে বেরোলেই মানুষজন দূর থেকে সরে যান। অনেকে ভেবে নেন এটি সংক্রামক রোগ, আর সেই ভুল ধারণার কারণে নিত্য লাল আরও একাকী হয়ে পড়েছেন। আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায় এখন তাঁর কাছে সঠিক চিকিৎসা করানোর মতো অর্থও নেই।
অসহায় এই অবস্থায় সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন নিত্য লাল পাল। তিনি জানান, তাঁর ঠিক কী রোগ হয়েছে তা তিনি নিজেও জানেন না। এমন রোগ তিনি জীবনে কখনো দেখেননি।
দিন-রাত তীব্র যন্ত্রণা তাঁকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। তাই তিনি রাজ্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন— যেন অন্তত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাঁকে এই নরকযন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি দেওয়া হয়।
এলাকার বাসিন্দারাও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের দাবি, একজন গরিব মানুষের জীবন এভাবে বিনা চিকিৎসায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে না। নিত্য লাল পালের চিকিৎসার জন্য দ্রুত সরকারি উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
নিত্য লাল পালের অসহায় পরিস্থিতি শুধু একজন দরিদ্র মানুষের ব্যক্তিগত লড়াই নয়, বরং সমাজ ও প্রশাসনের দায়িত্ববোধেরও এক কঠিন পরীক্ষা। এক অজানা রোগের যন্ত্রণা, আর্থিক অক্ষমতা এবং সামাজিক ভয়ের চাপে তিনি যে দুঃসহ সময় পার করছেন, তা দ্রুত সমাধান পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
সরকারের পাশাপাশি সমাজের সংশ্লিষ্ট সকলেরই উচিত মানবিকতার হাত বাড়িয়ে এই মানুষটিকে সুস্থ জীবনে ফেরানোর ব্যবস্থা করা। তাঁর চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে শুধুমাত্র একজন মানুষই নয়, মানবতারও জয় নিশ্চিত হবে।



