খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 27 November 2025 - 06:41 PM
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ - ০৬:৪১ অপরাহ্ণ

Agartala CITU Somabesh : ১৬ তম রাজ্য সন্মেলনে সিআইটিইউর সাড়া জাগানো সমাবেশ রাজধানী আগরতলার ওরিয়েন্ট চৌমুহনী তে

Agartala CITU Somabesh
1 minute read

Agartala CITU Somabesh : আজ ১০ই নভেম্বর ভারতের ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র তথা সিআইটিইউ র ১৬ তম রাজ্য সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজধানী আগরতলার ওরিয়েন্ট চৌমুহনী তে। যদিও এই সমাবেশ হবার কথা ছিল আস্তাবল তথা বিবেকানন্দ ময়দানে। কিন্তু অনুমতি না পেয়ে অগত্যা ওরিয়েন্ট চৌমুহনী কেই সমাবেশ স্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হল। স্থান যাই হোক না কেন, সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে প্রত্যাশানুরুপ ভাবেই।

সকাল সাড়ে ১১টায় দলীয় পতাকা ও সংগঠনের রক্তিম পতাকা উত্তোলন করা হয় টাউন হল প্রাঙ্গনে। উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী, সিআইটিইউ নেতা অমল চক্রবর্তী, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, প্রাক্তন সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, বাম নেতা রতন দাস, পশ্চিমবঙ্গ সিআইটিইউ সভাপতি অনাদি সাহু, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তপন সেন সহ অন্যান্যরা।

এর পর সেখান থেকে মিছিল করে দলে দলে শ্রমজীবী ও সিআইটিইউ কর্মী সমর্থকেরা ওরিয়েন্ট চৌমুহনী সমেবশ প্রাঙ্গনে মিলিত হতে শুরু করেন। রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও মহকুমা থেকে এদিন দলে দলে বামপন্থী শ্রমজীবী সংগঠনের সমাবেশে মিলিত হতে জন সাধারণ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আগরতলার উদ্দেশ্যে রউনা হতে শুরু করেন। কিন্তু খবর পাওয়া যায়, রাজ্যের বেশ কিছু মহকুমা স্তরে শাসক দলীয় মদত পুষ্ট একাংশ বিএমএস সংগঠন গুলো যান চলাচল বন্ধ করে রাখে।

এতে করেও রোখা যায়নি। ভোর রাত থেকেই দলে দলে রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে রউনা হয়ে রেল যোগে আগরতলায় এসে পৌঁছে যান কর্মীরা। বাধার ঘাট স্টেশনে আসার পর কোনো গাড়ি তাদের কে শহরে নিয়ে আসতে চায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। অতঃপর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে সিপিআইএম এর রাজ্য সন্মেলনের চিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে হাজার হাজার মানুষ আগরতলা রেল স্টেশন থেকে পায়ে হেটে আগরতলার উদ্দেশ্যে রউনা হন।

এদিন ওরিয়েন্ট চৌমুহনী এলাকা আবারো লালে লাল হয়ে উঠে। জনসমাগমে রীতিমতো তিল ধরার জায়গা ছিল না গোটা এলাকায়। মঞ্চে অধিষ্ঠিত ছিলেন রাজ্যের ২০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার , বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী সহ পশ্চিম বঙ্গ থেকে আগত সিআইটিইউ সভাপতি ও প্রাক্তন সম্পাদক মণ্ডলী।

একে একে মানিক দে, শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, অনাদি সাহু, তপন সেন বক্তব্য রাখেন। অতঃপর জিতেন্দ্র চৌধুরী মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজ ভাষণে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বিজেপি কে তুলোধোনা করেন । শ্রমজীবী মানুষ কে পরাজিত করা যায়না। তারা পরাজিত হয়না। ভারতের ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ষোড়শ সন্মেলন মঞ্চে দাঁড়িয়ে উনি বলেন, বামেদের সভা কে বাঞ্চাল করতে নিত্য নতুন কায়দা গ্রহন করছে বিজেপি।

কখনো সভার পাশে কীর্তন বসিয়ে দিচ্ছে, কখনো মঙ্গল বাড়ে শনি পুজো করছে। আর কদিন বাদে এরা মা কে বাবা, বাবা কে মা ডাকবে। আবার সম্ভব হলে স্ত্রী কেও গিয়ে মা ডাকতে শুরু করবে। এরা এমনই। এভাবেই বিজেপি কে রীতিমতো কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী।

এর পর মঞ্চে ভাষণ রাখতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার , একই ভাবে বিজেপি কে এক হাত নিলেন। আর এস এস নিয়ন্ত্রিত বিজেপি সরকার দেশে ক্ষমতাসীন। যে আরএসএস হিটলার , মুসোলিনির আদর্শে দীক্ষিত। তাদের সিক্ষায় শিক্ষিত, ভারত বর্ষের বুকে ফ্যাসিবাদ কায়েমের লক্ষ্যে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাদের ৬৪ – ৬৮ টি সংগঠন রয়েছে, যার অন্যতম বিজেপি। যা কিনা স্বাধীন ভারত বর্ষে জন বিরোধী , প্রতিক্রিয়া হীন ও বর্তমানে পুঁজিপতি দের রক্ষক হিসেবে কাজ করছে। এধরণের একটি সরকার ভারত বাসী এর আগে দেখেনি।

এর আগেও বহু সরকার এসেছে এ দেশে। কোনটাই শোষণ পীড়ন মুক্ত ছিল এমন নয়। কিন্তু বিজেপি সব কিছুর ঊর্ধ্বে চলে গেছে। কেন্দ্রে ও রাজ্যে একই সরকারে থাকলেও শ্রমজীবী মানুষ মাথার ঘাম পেয়ে ফেলে, মুখে অন্ন তুলে দিয়েও তাদের উপযুক্ত হকের অর্থ তারা পান না। তাদের দু বেলার অন্ন জোটে না। এই হচ্ছে বিজেপি সরকারের বাস্তব ছবি। এভাবেই সন্মেলন মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল স্বৈরাচার বিরোধী সুর।

বলা বাহুল্য, এদিন সন্মেলন এর শুরু থেকে শেষ অব্দি ওরিয়েন্ট চৌমুহনী ছিল লালে রঞ্জিত। ওরিয়েন্ট এর দ্বিতল বিশিষ্ট ভবন গুলোর ছাদে দাঁড়িয়ে ও শ্রোতারা মঞ্চে থাকা নেতৃত্বের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। আগামী দিনে বাম পন্থিরা যে শাসক বিজেপি কে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে লড়াই এর ময়দানে তাদের দাপট দেখিয়ে বেরাবে তাঁর আরও এক নিদর্শন আজকের এই সমাবেশ। যা বিজেপির ভীত নাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিতীয় বারের মতো।

For All Latest Updates

ভিডিও