CPIM Matabari News : গোমতি জেলার মাতাবাড়ি আর.ডি. ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মীপতি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবারও প্রকাশ পেল সরকারি অফিসের চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার চিত্র। অভিযোগ, আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিসের দরজা পর্যন্ত খোলা হয়নি। সাধারণ মানুষ, পঞ্চায়েতের কাজের প্রয়োজনে আসা গ্রামবাসী, এমনকি দলীয় প্রতিনিধিরাও সকাল থেকে অপেক্ষা করলেও অফিস খোলেনি— যা সরকারের ‘ডাবল ইঞ্জিন’ প্রশাসনের কার্যক্ষমতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
জানা গেছে, আজ বিরোধী দল সিপিআই(এম)-এর একটি প্রতিনিধি দল পঞ্চায়েত স্তরের বিভিন্ন জনস্বার্থমূলক সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত সচিবের মাধ্যমে সরকারের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে আসেন। কিন্তু পঞ্চায়েত সচিব নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে সকাল ১১টা পর্যন্ত অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন, যাতে এই ডেপুটেশন গ্রহণ না করা যায়। এই ঘটনাকে বিরোধীরা দেখছেন সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এক পদক্ষেপ হিসেবে।
স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্বের অভিযোগ, এই ধরনের আচরণ শুধুমাত্র প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করার একটি কৌশল। সরকার যদি সত্যিই জনস্বার্থে কাজ করতে চায়, তবে কেন পঞ্চায়েত পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর পৌঁছানোর পথ আটকে দেওয়া হচ্ছে?
একদিকে সরকার দাবি করে “ডাবল ইঞ্জিন সরকারে উন্নয়নের গতি দ্বিগুণ”, অন্যদিকে পঞ্চায়েত অফিসের দরজা সকাল ১১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে — যা স্পষ্ট করে দেয় যে প্রশাসনের বাস্তব চিত্র কাগজে-কলমে উন্নয়নের গল্পের একেবারেই বিপরীত। গ্রামের মানুষ জানান, এটি একদিনের ঘটনা নয়। প্রায়ই দেখা যায় পঞ্চায়েত অফিস নির্দিষ্ট সময়ে খোলে না, সচিব বা কর্মীরা দেরিতে আসেন, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষকে ফিরে যেতে হয়।
লক্ষ্মীপতি গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় স্থানীয় জনমনে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, “আমাদের ভোটে নির্বাচিত এই সরকার যদি গ্রামের মানুষের সমস্যাই শুনতে না চায়, তবে উন্নয়নের দাবি কিসের?”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী দল স্থানীয় প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে এবং দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায় — ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে যেখানে “সুশাসন” ও “দ্রুত পরিষেবা”র প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে কি সত্যিই মানুষের স্বার্থই আজ উপেক্ষিত হচ্ছে? নাকি ক্ষমতার গাড়ি দুই ইঞ্জিনে চললেও, তার দিশা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছে প্রশাসন নিজেই?



