খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 27 November 2025 - 11:23 PM
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ - ১১:২৩ অপরাহ্ণ

Sudip Roy Barman Press Meet : সাংসদ বিপ্লব দেবের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর- দাবি সুদীপ রায় বর্মনের

Sudip Roy Barman Press Meet
1 minute read

Sudip Roy Barman Press Meet : ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবকে তীব্রভাবে আক্রমণ করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন। তাঁর অভিযোগ— বিপ্লব দেব মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন এবং ভারতের সংবিধান সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে সুদীপ বাবু বলেন, “বিপ্লব দেব সম্প্রতি সংবিধানের ২৫(এ) ধারা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু আমাদের দেশের সংবিধানে এমন কোনো ধারা আদৌ নেই। সংবিধানের আর্টিকেল ২৫ হল ধর্মীয় স্বাধীনতা বা freedom of religion সংক্রান্ত। অথচ তিনি যেভাবে কথা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং ভুল ব্যাখ্যা।”

তিনি আরও জানান, বিপ্লব দেব ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিলের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ভুলভাবে আর্টিকেল ২৫(এ)-এর উল্লেখ করেছেন। “যিনি দেশের সংবিধান সম্পর্কে জানেন না, তাঁর উচিত নয় এইভাবে প্রকাশ্যে ভুল তথ্য ছড়ানো,” তীব্র কটাক্ষ করেন সুদীপ রায় বর্মন।

সাংবাদিক সম্মেলনে উঠে আসে তিপ্রাসা একর্ড সংক্রান্ত বিতর্কও। বিপ্লব দেব সম্প্রতি বলেছেন, “তিপ্রাসা একর্ডের সমস্যা শুধু ত্রিপুরার নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, যেমন তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গেও একইরকম সমস্যা রয়েছে।”


এই বক্তব্যের জবাবে সুদীপ বাবু জানান, “তিপ্রাসা একর্ড কেবলমাত্র ত্রিপুরার প্রেক্ষিতেই প্রযোজ্য, অন্য কোনো রাজ্যের সঙ্গে এর মিল নেই। সাংসদের এই মন্তব্য স্পষ্টতই তথ্যভিত্তিক নয় এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে করা।”

তিনি আরও বলেন, ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিল অনুযায়ী বর্তমানে দেশের চারটি রাজ্যে— ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও মিজোরাম — ষষ্ঠ তফসিল (6th Schedule) প্রযোজ্য।
“বিপ্লব দেব সম্ভবত এই মৌলিক বিষয়টিই জানেন না,” মন্তব্য করেন সুদীপ রায় বর্মন। “রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে না জেনে কথা বলা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছাড়া কিছু নয়।”

৭ নভেম্বর আগরতলায় নির্ধারিত তিপ্রামথা দলের সভা নিয়েও বিতর্কের সুর ছড়িয়েছে। কংগ্রেসের মতে, এই সভাকে ঘিরে বিজেপি নেতাদের মন্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কানিমূলক।
সুদীপ রায় বর্মন বলেন, “৭ নভেম্বরের সভাকে সামনে রেখে বিপ্লব দেবের বক্তব্য রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি করছে। এটি একধরনের রাজনৈতিক প্ররোচনা।”

তিনি আরও জানান, কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তিপ্রামথা নেতৃত্বকে অনুরোধ করেছে ৭ নভেম্বরের সভার দিন পরিবর্তনের জন্য। একই সঙ্গে সরকারের কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে— ওই তারিখে সভার অনুমতি না দেওয়ার জন্য।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে সুদীপ রায় বর্মন দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আগরতলার মালিক ত্রিপুরার প্রতিটি নাগরিক। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এই শহরকে নিজের সম্পত্তি মনে করতে পারে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিজেপির একাংশ এমনভাবে আচরণ করছে, যেন তারা ১৯৮০-র দশকের উত্তেজনাপূর্ণ সময়কে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা।

সাংবাদিক সম্মেলনের শেষ ভাগে সুদীপ রায় বর্মন জিরানীয়া কফ সিরাপ কাণ্ড নিয়েও মুখ খোলেন। তাঁর মন্তব্য— “এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়, সিপিআই(এম)-এর আমল থেকেই চলে আসছে। তখন বাম হনুমান ছিল, এখন রাম হনুমান। পুলিশ সব জানে, কিন্তু পদক্ষেপ নেই।”

তিনি বলেন, “সরকারের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে— অর্থ বড় না রাজ্যের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ বড়। এ ধরনের কাণ্ডে সমাজের এক বড় অংশ জড়িয়ে পড়ছে, যা রাজ্যের জন্য ভয়াবহ সংকেত।”

সুদীপ বাবুর অভিযোগ, “আগের বাম আমলে যেমন বেআইনি মাদক চক্র চলত, এখন তা আরও বেড়ে গেছে। সরকারের উচিত এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।”

একই সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, ৭ নভেম্বরের তিপ্রামথা সভা ঘিরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে, যদি দুই পক্ষ সংযম না দেখায়।

For All Latest Updates

ভিডিও