খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 27 November 2025 - 06:40 PM
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ - ০৬:৪০ অপরাহ্ণ

Madhabi Bishwas Case : তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের পর আদালতে বিস্ফোরক অভিযোগ মাধবীর

Madhabi Bishwas Case
1 minute read

Madhabi Bishwas Case : তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হয় মাধবী বিশ্বাসকে। এদিন আদালত প্রাঙ্গণে সরগরম পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন মাধবীর পক্ষের আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন সংবাদমাধ্যমের সামনে।

আইনজীবী জানান, মাধবী বিশ্বাসের পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হলেও পুলিশ আরও পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানায়। এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করেন মাধবীর পক্ষের উকিল পুরুষোত্তম রায় বর্মন। তিনি বলেন, “মাধবীর বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে, তাতে পুলিশ হেফাজতের কোনও যৌক্তিকতা নেই। এই মামলা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তিনি আরও জানান, মাধবী আদালতে প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে গত তিনদিন ধরে পুলিশ তাঁকে তথাকথিত জেরার নামে মানসিক চাপে রাখছে। তাঁকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে যেন তিনি কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম)-এর নেতাদের নাম জড়ান। কিন্তু মাধবী আদালতের সামনেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “আমার মোবাইল, ল্যাপটপ সব নিয়ে যাচাই করুন—আমি কারও কাছ থেকে একটাকাও নিইনি।”

এছাড়া জানা গেছে, রিমান্ড চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন মাধবী। পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যেই পুনরায় পুলিশ হেফাজতে ফিরিয়ে আনা হয়। যদিও কর্তব্যরত চিকিৎসক নাকি বলেছিলো মাধবীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করা প্রয়োজন ছিল। এই বিষয়টি নিয়েও আদালতে প্রশ্ন তোলেন পুরুষোত্তম রায় বর্মন।

পুলিশের দাবি, মাধবীর ফেসবুক এবং ল্যাপটপের পাসওয়ার্ড তারা পাচ্ছে না, ফলে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে। এই যুক্তিকে কটাক্ষ করে আইনজীবী বলেন, “সাইবার ক্রাইম বিভাগ যদি সত্যিই কাজের মধ্যে দক্ষ হয়, তাহলে কারও পাসওয়ার্ড পাওয়া তাদের পক্ষে বড় বিষয় নয়। পাসওয়ার্ড না পাওয়া মানে তারা তদন্তের অজুহাত খুঁজছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই মামলা আসলে এক নারী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। মাধবী সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, তাই তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা রাখি, সত্যের জয় হবেই।”

প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যমে সরকারের নীতি, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং রাজ্য রাজনীতির নানা বিষয় নিয়ে ধারালো মন্তব্য করার জন্যই মাধবী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল থেকে একাধিক ভিডিও ও পোস্টে তিনি বর্তমান ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের কটাক্ষ করেন। এরপর থেকেই পুলিশ তাঁকে একাধিকবার থানায় ডেকে সতর্ক করে—সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য বন্ধ না করলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত সেই হুঁশিয়ারিই বাস্তব রূপ নেয়, এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

মাধবীর বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা হয়েছে তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন। তাঁর দাবি, “এই ধারায় গ্রেফতারের কোনও বৈধতা নেই। এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার সরাসরি লঙ্ঘন।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, মাধবীর এই গ্রেফতার শুধু একজন মহিলার বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি সমাজে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা। সরকারের সমালোচক যে-ই হোক না কেন, তার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অনেকের ধারণা, এই মামলার মাধ্যমে বিরোধীদের মধ্যে ভয় ঢোকাতে চাইছে প্রশাসন।

আদালতের পরবর্তী শুনানিতে এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে। কিন্তু এখনই স্পষ্ট—এই মামলা শুধু একজন নাগরিকের নয়, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে উঠছে।

পুরুষোত্তম রায় বর্মনের কথায়, “এই মামলা ধোপে টিকবে না। আদালত সত্যের পাশে থাকবে, এই আমাদের বিশ্বাস।”

For All Latest Updates

ভিডিও