Biplab Kumar Deb Condemns Madhabi : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এক মহিলার আপত্তিকর মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান লোকসভা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। বৃহস্পতিবার আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, “যে মহিলা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, তাকে যদি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ‘ভদ্রমহিলা’ বলে সম্বোধন করেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। উনার কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয়।”
বিপ্লব দেব বলেন, “যদি কেউ মানিক সরকারের বিরুদ্ধেও এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করত, তবুও আমি তার প্রতিবাদ করতাম। রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি সিভিল সোসাইটির ডাকা সাম্প্রতিক বন্ধ এবং কমলপুর-সালেমাতে সংঘটিত ঘটনাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানান। তার বক্তব্য, “বন্ধ এবং ট্রাইক — এগুলো তো কমিউনিস্টদের ভাষা। এই ধরনের আন্দোলন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো ছাড়া কিছুই করে না। ঘটনার দোষীদের দ্রুত শাস্তি হোক — এটাই আমাদের দাবি।”
বিপ্লব দেবের মতে, “এই সমাজব্যবস্থার সঙ্গে কমিউনিস্টদের রীতিনীতি আর খাপ খায় না। তারা এখন নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে শুধুই রাজনীতির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।”
বিপ্লব দেব এদিন সিপিআই(এম)-এর নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও তীব্র আক্রমণ শানান। বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কমিউনিস্টরা এখন দিশেহারা। ২০২৮ তো দূরের কথা, ২০৮৮ সালেও তারা ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না। কারণ মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যুবসমাজও এখন তাদের পাশে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “নৃপেন চক্রবর্তীদের মতো নেতৃত্ব যেভাবে রাজ্য গড়েছিলেন, আজকের নেতৃত্ব সেটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। কমিউনিস্টরা দুনিয়া থেকে মুছে যাচ্ছে, কারণ তারা বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্ন।”
এদিন তিনি সম্প্রতি প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের উচ্চারণ নিয়ে বিতর্ক ছড়ানোর ঘটনাকেও বিকৃতি বলে দাবি করেন সাংসদ বিপ্লব দেব। তিনি বলেন, “রাজীব ভট্টাচার্যর মন্তব্যকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করছে কমিউনিস্টরা। রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নেওয়ার জন্যই তারা এভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
বিপ্লব দেব বলেন, “নরেন্দ্র মোদী হলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রকৃত অভিভাবক। উনার নেতৃত্বেই এই অঞ্চলের বিকাশ সম্ভব হয়েছে। মনমোহন সিং যদিও উত্তর-পূর্বের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন, তবুও তার সময়ে এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। মোদীজির আমলে ত্রিপুরা এবং সমগ্র নর্থ ইস্টে যে পরিবর্তন এসেছে, তা নজিরবিহীন।”
তিনি আরও দাবি করেন, “প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনও ভালো করেই জানেন, জনজাতি সমাজের উন্নয়ন মোদীজির হাতেই সম্ভব। মোদীজির সময়েই ত্রিপুরার আদিবাসী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি কল্যাণমূলক কাজ হয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব নেওয়ার পর সে রাজ্যের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিপ্লব কুমার দেব। তার ভাষায়, “মমতা ব্যানার্জির ভস্ম হওয়ার সময় এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে এখন মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জমেছে। আজ বিজেপিকে মানুষ খুঁজে নিতে হচ্ছে না — মানুষই এখন বিজেপির পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে।”
তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ মনীষীদের ভূমি, সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির আমলে সেই গৌরব ধূলিসাৎ হয়েছে। নারীরা আজ সেখানে নিরাপদ নয়। প্রশাসনিক সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি রাজ্যটিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বাংলার মানুষ এখন কেবল মোদীজির নেতৃত্বেই নিরাপত্তা ও উন্নয়নের আশায় বুক বাঁধছে।”
রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। বলেন, “আজ কংগ্রেস কোথায়? আমি তো দেখতে পাই না তারা কোথায় আছে। তারা এখন শুধু বৈশাখী দল — কোনো নীতি নেই, দিকনির্দেশনা নেই।
সাংবাদিক সম্মেলনের শেষে বিপ্লব দেব বলেন “দেশের নেতৃত্ব আজ মোদীজির মতো ব্যক্তিত্বের হাতে নিরাপদ। নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বের প্রতিটি নাগরিকের উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করছেন। যারা এই পথের বাধা হয়ে দাঁড়াবে, জনগণ তাদেরই প্রত্যাখ্যান করবে।



