Supreme Court CJI Issue : সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে জুতো ছুড়ে মারায় অভিযুক্ত আইনজীবী কে কুর্নিশ জানালো বিজেপির এক নেতা। কর্ণাটকের ঐ নেতার এই আচরণে তীব্র নিন্দার ঝড়। প্রধানমন্ত্রী যেখানে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সেখানে তার দলেরই আরেক নেতা এই ঘটনাকে সমর্থন করে। বিজেপি দলের অন্দর মহলেই যে মতবিভেদ আছে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এই ঘটনা।
প্রসঙ্গত , একটি জনস্বার্থ মামলা কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই সম্প্রতি মামলা চলাকালীন একটি টিপ্পনী করেছিলেন। যা নিয়ে এক প্রকার ক্ষোভ উজাড় করতে গিয়ে বিচার পতির দিকে নিজের পায়ের শু ছুড়ে মারেন রাকেশ কিশোর নামের ঐ আইনজীবী। উনি একজন এমএসসি , পিএইচডি করা শিক্ষিত আইনজীবী বটে। কিন্তু তার এই আচরণ কোনোভাবেই যে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ বহন করছেন না সেই নিয়ে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
একজন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি কে জুতো ছুড়ে মারার সাহস উনি পেলেন কোত্থেকে, এই নিয়ে যখন সমালোচনার ঝড় তখন কর্ণাটকের বিজেপি দলীয় এক নেতা উনার এই কর্ম কাণ্ড কে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে যেখানে এই ঘটনার চূড়ান্ত নিন্দা জানিয়েছেন সেখানে উনার দলেরই এক নেতা এই ঘটনার জন্যে রাকেশ কিশোর কে কুর্নিশ জানাচ্ছে, তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। কতটা নিম্ন মানসিকতার পরিচয় দিলেন ঐ গুণধর বিজেপি নেতা, সেটা ভেবেই অবাক হতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তের প্রশংসা করে বিতর্কে জড়িয়ে পরা কর্ণাটকের সেই বিজেপি নেতার নাম ভাস্কর রাও। উনি আবার বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাকেশ কিশোরের উদ্দেশ্যে উনি বলেন, “আপনার সাহসের জবাব নেই।” একজন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি কে জুতো ছুড়ে মারতে গেলে যে সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয় তাই দিয়েছেন রাকেশ কিশোর , এমনটাই বুঝিয়েছেন ভাস্কর রাও। আর এই সব কিছুর নেপথ্যে একটাই প্রসঙ্গ, সনাতন ধর্মের অপমান। আবারো ধর্মের নামে রাজনীতির পন্থা কে প্রথম শাড়ী তে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপির এই গুণধর নেতা।
খাজুরাহুর বিষ্ণু মূর্তি সংস্কার কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলার জেরে সিযেআই বিআর গাভাই মামলাটি খারিজ করে দিয়ে উক্তি করেছিলেন যে, “ আপনার ভগবান কেই বলুন নিজের জন্যে কিছু করতে “। এই উক্তি কে ঘিরেই শুরু হয় বিবাদ। রাকেশ কিশোর এর মন্তব্য উনি নাকি কট্টর হিন্দুত্ববাদি। সনাতন ধর্মের অপমান নাকি সহ্য করবেন না। যদিও সিযেআই জানিয়েছেন, উনার উক্তির ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আর ঐ অবস্থায় সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে বুদ্ধিমত্তার সাথে উনি পরিস্থিতি সামলে ও নিয়েছেন।
ওদিকে অভিযুক্ত আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিল করেছে বার কাউন্সিল। মামলা না হবার ফলে তার বিরুদ্ধে আইনত কোনো পদক্ষেপ যদিও গৃহীত হয়নি। কিন্তু তার পক্ষ পাতিত্বে বিজেপির কতিপয় নেতা বর্গ যেভাবে শায় দিচ্ছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির প্রতি এমন অশালীন আচরণ কে প্রশ্রয় দেওয়া প্রত্যক্ষ ভাবে ধর্মের নামে বিভেদ ছড়ানোর স্পষ্ট প্রয়াস , এমনটাই মনে করা হচ্ছে।