Netaji Play Centre : নেতাজী প্লে সেন্টারে পুজো দেখতে গিয়ে আক্রান্ত এক গৃহবধূ। সঙ্গে আক্রান্ত স্বামী , ভাই সহ তার ছোট্ট শিশু সন্তান। আগরতলার বুকে এই ঘটনা কেবল মাত্র নিন্দনীয়ই নয়, বরং সুস্থ সামাজিকতার পরিপন্থি ও বটে।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা তে স্বনামধন্য ও বনেদী ক্লাব গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে নেতাজী প্লে সেন্টার। প্রতি বছর লক্ষাধিক দর্শনার্থীর ভিড় জমে এই ক্লাবের পুজো প্যান্ডেলে। অনেকেই পুজোর তিন দিন সব কটি পুজো প্যান্ডেল না ঘুরতে পারলে দশমিতেও শহরের বনেদী পুজো গুলো দেখতে বেড় হন।
একই ভাবে এদিন উজান অভয়নগরের বাসিন্দা সুব্রত সরকার ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান ও আত্মিয়দের নিয়ে পুজো দেখতে বেড় হন। ঘুরতে ঘুরতে তারা গিয়ে পৌঁছান নেতাজী প্লে সেন্টারে। যেখানে আবার আনন্দ মেলার ও আয়োজন করা হয়েছিল।
যথারীতি সুব্রত সরকার নিজের পরিবার নিয়ে মেলায় গিয়ে নাগরদলায় উঠবেন বলে ৮০ টাকা করে মোট ৩২০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটেন। কিন্তু নাগরদলায় কেবল দুজন কেই উঠানো হয়। বাকি দুজন অর্থাৎ সুব্রত সরকার তার ছোট্ট শিশু কে নিয়ে নিচেই দাঁড়িয়ে থাকেন। এর পরই যিনি নাগরদোলা চালাচ্ছিলেন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে টিকিট থাকা সত্বেও এবং নাগরদোলা তে জায়গা থাকা সত্বেও কেন বাকি দুজন কে চরতে দেওয়া হল না, এই প্রশ্ন করা মাত্রই ক্ষেপে উঠে নাগরদোলা চালক।
সাথে সাথে সুব্রত সরকার কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই তার উপর হামলে পরে এক দল যুবক। তাকে বেধরন মারধোর করা হয়। এমনকি নেতাজী প্লে ফোরাম ক্লাবের কিছু সদস্য ও ছুটে এসে সুব্রত ও তার স্ত্রী সন্তানের উপর হামলে পরে। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। সঙ্গে সঙ্গে ১১২ তে ফোন দিলে ছুটে আসে পুলিশ এবং আহত সুব্রত ও তার স্ত্রী কে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দুর্গা পুজো শেষ হতে না হতেই চারিদিকে আবারো যেন অন্যায় অবিচার বিস্তৃতি লাভ করছে। শহরের বুকে দশমীর দিনে একাধিক অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটেছে। একটি বনেদী ক্লাব এ পুজো দেখতে গিয়ে দর্শনার্থীদের সাথে এমন ঘটনা কল্পনাই করা যায়না। জানা যায় , এই ঘটনার সাথে জড়িত ক্লাব সদস্যদের মধ্যে রয়েছে ওই এলাকারই কৌশিক আচার্যী, দ্বীপায়ন সাহা ওরফে বিল্টু, সাগর দে, কিষান বিশ্বাস নামে কতিপয় কিছু সমাজ দ্রোহী।
শুধুমাত্র মারধোর ই নয়, অভিযুক্তরা গৃহবধূর গায়ে নানাভাবে স্পর্শ করার ও চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েচে। এই ঘটনায় যদিও পুলিশ বেশ কয়েকজন কে জিজ্ঞাসাবাদ এর উদ্দেশ্যে থানায় নিয়ে গেছে। অন্যদিকে আশ্চর্যয়ের বিষয় হচ্ছে, এতো বড় ঘটনা ঘটে গেলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ কিংবা সভাপতি সম্পাদক কাউকেই দেখা যায়নি ঘটনা স্থলে কিংবা পরিবার টির সাথে কথা বলতে। বরং থানায় ক্লাব কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এই ঘটনার জেরে ক্লাব কর্তৃপক্ষ যেমন একদিকে নিন্দার পাত্র হয়ে উঠেছে, তেমনি প্রশ্ন উঠছে মানুষের নিরাপত্তা আদৌ কোথায় ?
প্যান্ডেলে পুজো দেখতে গিয়েও এখন নিরাপত্তা নেই মানুষের। গোটা রাজ্যে দুর্গা পুজো কে কেন্দ্র করে কোটি টাকার ফ্লেক্স ফেস্টুন ছাপাতে ব্যতিব্যস্ত সরকার যদি প্রতিটি ক্লাব চত্বরে দ্বিগুণ হারে প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রদানে ব্যয় করতো সেই অর্থ তাহলে আজ এধরণের ঘটনার সাক্ষী হতে হতনা রাজ্যবাসী কে।
এই ঘটনা সবার কাছে একটি শিক্ষা হয়ে থেকে গেল। আগামী দিনে নেতাজী প্লে সেন্টার দের মতো ক্লাব দর্শনার্থীদের ভরসা ফিরে পাবে কিনা, মানুষ আদৌ এদের প্যান্ডেল মুখী হবে কিনা সেটা নিয়েই বরং এখন সন্দিহান সচেতন মহল ।