BJP Tipra Motha Riot : বিজেপির সাথে তিপ্রা মথার ভালোবাসার সম্পর্ক ক্রমশই ভাঙ্গনের দিকে গড়াচ্ছে। তিপ্রা মথার মারে ক্ষত বিক্ষত বিজেপি। কখনো বিজেপির নেতা কে উত্তম মধ্যম , কখনো আবার গোটা বিজেপি পার্টি অফিসেই হামলা। বিজেপির ঘরের শত্রু বিভীষণ রূপে ধরা দিয়েছে মথা।
যে মথার উপর ভর করে ২০২৩ এ ভোট বৈতরণী পাড় হল বিজেপি, যাকে শরিক এর মর্যাদা দিয়ে মন্ত্রীসভা অব্দি স্থান দিলো বিজেপি – সেই মথাই এখন বিজেপি কে রীতিমতো নাকানি চুবোনি দিতে উঠে পরে লেগেছে।
১১ মান্দাই মণ্ডল এর উদ্যোগে বুধবার একটি বস্ত্র দান কর্মসূচীর আয়োজন করার কথা ছিল। প্রধান অতিথি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। উনার হাত ধরেই ঐ এলাকার জাতি জনজাতি অংশের মা বোনেদের নতুন বস্ত্র বিতরণ এর অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু আচমকা ঠিক তাঁর এক দিন আগে অর্থাৎ মঙ্গলবার রাত প্রায় ৮টা নাগাদ এক দল দুষ্কৃতী বিজেপির মণ্ডল কার্যালয়ে হামলা চালায়, চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে এবং শেষে অগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায়।
আর এই সব কিছু হয় নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর সামনেই। মুখ্যমন্ত্রীর আগমন কে ঘিরে করা নিরাপত্তা মোতায়েন ছিল সেই এলাকায়। তাঁর পরেও এই ঘটনা ঘটিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। আর ঘটনার পর পর যখন বিজেপি নেতৃত্বরা ঐ পার্টি অফিসে যান তখন তাদের নজর যায় শরিক তিপ্রা মথার পতাকার দিকে। যা গতকাল রাতে দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালায়। এর থেকে স্পষ্ট যে এই আমলা আর কেউ নয়, মথা আশ্রিত একাংশ দুষ্কৃতীরাই চালিয়েছে।
এটা প্রথমবার নয়। এর আগে জম্পুই জলা তে একাধিক বার বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে মথা। এর পর গত দুদিন আগে হেজামারা তে বিজেপির একটি কর্মসূচী তে মারধোর করে মথা সমর্থিত কিছু দুষ্কৃতী। যাতে একজন সাংবাদিক ও গুরুতর আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বিজেপি কে যে ঘুণাক্ষরেও সহ্য করতে পারছে না তাদেরই শরিক দল সেটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না। আর এতদিন যাবত এই সব কিছু মুখ বুঝে দেখে আসলেও এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। শরিক হয়েও এধরণের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। এভাবে রাজনীতি হয়না, এভাবে কাজ করা জাবেনা। এর বিরুদ্ধে আইন আইনের মতো করে ব্যবস্থা নেবে, এমনটাই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিংবা বলা ভালো যে এবার মুখ্যমন্ত্রী তিপ্রা মথা কে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এছাড়া মান্দাই এর ঘটনা কে ঘিরে মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা ও খোলাখুলি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন , মারধোর করে বিজেপি কে দমিয়ে দেওয়া জাবেনা। বিজেপি কে আঘাত করে হজম করা কঠিন হবে। উরা এসব বন্ধ না করলে আমরাও এবার ময়দানে নামবো। মন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি থেকেও স্পষ্ট যে বিজেপির অন্দর মহলে তিপ্রা মথা ধীরে ধীরে বিষক্রিয়া করতে শুরু করেছে। যার ফলে অল্প অল্প করে বিজেপি মথার সখ্যতা ভাঙ্গছে।
এদিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফর ও মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মথার সৃষ্টি কর্তা প্রদ্যুত মানিক্য কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও কিছু কিছু সূত্রের দাবী। তবে কি অন্দর মহলে তিপ্রা মথার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বিজেপি ? নাকি মথা নিজে থেকেই সংখ্যা গরিষ্ঠ শাসক বিজেপি কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারছে ? তবে যাই হোক, এতে করে রাজ্য বাসীর কাছে তিপ্রা মথার আসল চেহারা যে খসে পড়ছে তাতে সন্দেহ থাকেনা। এবার এই মথা নামক বিষক্রিয়া আগামী দিনে বিজেপি কেই অস্তিত্ব হীন করে দেয় কিনা সেটাই চিন্তার বিষয়।