Melaghar BMS News : মেলাঘরে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস)–এর অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ঘিরে। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি সমর্থিত এই শ্রমিক সংগঠনের ভেতরে দ্বন্দ্বের খবর শোনা যাচ্ছিল। এবার সেই সংঘাত রাস্তায় নেমে আঘাত হানল সাধারণ অটো চালকদের জীবনে।
বিএমএস-এর দুর্লভ নারায়ণ শাখা ও মেলাঘর শাখার মধ্যে টানাপোড়েন নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিককালে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করায় শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনে বড় প্রভাব পড়েছে। অভিযোগ, দ্বন্দ্বের কারণে পরিবহন পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে, যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে এবং শ্রমিকেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সোমবার পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়। ক্ষুব্ধ অটো শ্রমিকরা দুর্লভ নারায়ণ বাজারে বিক্ষোভে সামিল হয়ে রাস্তায় অবরোধ গড়ে তোলেন। তাদের অভিযোগ—গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হচ্ছে নিরীহ চালক ও শ্রমিকদের। এই অবরোধ ঘিরে এলাকাজুড়ে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়।
অবরোধ প্রত্যাহারের উদ্যোগে ঘটনাস্থলে হাজির হন বিজেপি নেতা ও নলছড় মণ্ডল সদস্য বিমল দাস। তাঁকে পাঠিয়েছিলেন ব্লক চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাসসহ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টায়ও শেষ পর্যন্ত সাফল্য আসেনি। রবিবার দুর্লভ নারায়ণ কমিউনিটি হলে সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা ছিল, তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। বরং গোষ্ঠীসংঘাত আরও বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
এই অচলাবস্থার কারণে বহু অটো শ্রমিক মেলাঘরে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তাঁদের মধ্যে। অভিযোগ উঠেছে, শ্রমিকদের উপর হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় ঘটনাস্থলে যান সিপিআই(এম)-এর লোকাল কমিটির সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি শ্রমিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, অটো শ্রমিকদের উপর কোনো হামলা হলে বামফ্রন্ট সরাসরি মাঠে নামবে।
বাম নেতৃত্বের এই আশ্বাস কিছুটা সাহস জুগিয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। তবে তাঁদের মূল দাবি—দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ। তাঁদের মতে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হওয়া মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয় মহলের বক্তব্য, দলীয় অন্তর্কলহ যদি এইভাবে রাস্তায় প্রতিফলিত হয়, তবে তার বোঝা সাধারণ মানুষকেই বইতে হয়। গোষ্ঠী কোন্দল নিরসনে প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।