Sitaram Yecuri Kanchanpur : ভারতের বাম রাজনীতির ইতিহাসে সীতারাম ইয়েচুরির নাম এক উজ্জ্বল অধ্যায়। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে তাঁকে স্মরণ করা মানে শুধু একজন রাজনৈতিক নেতাকে নয়, বরং এক প্রজন্মের পথপ্রদর্শককে স্মরণ করা। মার্ক্সবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ইয়েচুরি তাঁর সারাজীবন ব্যয় করেছেন সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে।
ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতির মূলধারায় আসা ইয়েচুরি শুরু থেকেই বাম রাজনীতিকে আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তৃতা, লেখনী ও চিন্তাধারা সবসময়ই স্পষ্ট এবং বাস্তবভিত্তিক ছিল। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-যুবক—সকলের স্বার্থরক্ষায় তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
তিনি বিশ্বাস করতেন ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাই ধর্মনিরপেক্ষতা, সাম্য ও গণতন্ত্রকে তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনদর্শনের কেন্দ্রে রেখেছিলেন। সাংসদ হিসেবে সংসদে তাঁর যুক্তিনির্ভর বক্তব্য বহু বিতর্কে দিশা দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভারতীয় বাম রাজনীতির মুখ হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে ইয়েচুরি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী। সহজ-সরল ব্যবহার দিয়ে তিনি শুধু দলীয় কর্মীদের নয়, বিরোধী শিবিরের নেতাদেরও সম্মান অর্জন করেছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা প্রমাণ করেছে যে সত্যিকারের নেতৃত্ব মানে শুধুমাত্র ক্ষমতা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে মাটির সম্পর্ক গড়ে তোলা।
আজ যখন রাজনীতিতে বিভাজন, সংকীর্ণতা ও ব্যক্তিস্বার্থ দিন দিন বেড়ে চলেছে, তখন সীতারাম ইয়েচুরির জীবন আমাদের শেখায় কিভাবে আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তাঁর চিন্তা ও কর্মপ্রেরণা আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয়।
তাঁকে হারানো শুধু বাম রাজনীতির নয়, ভারতের গণতান্ত্রিক চেতনার জন্যও এক অপূরণীয় ক্ষতি। তবে তাঁর রচনা, তাঁর সংগ্রামের ইতিহাস এবং তাঁর আদর্শ চিরকাল বেঁচে থাকবে নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণায়।