Agartala AMC News : আগরতলার দক্ষিণ জয়পুর পশ্চিমপাড়া এলাকায় শনিবার ভোরে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকল স্থানীয় বাসিন্দারা। হাওড়া নদীর তীরে প্রায় ৪০–৪৫ বছর ধরে গড়ে ওঠা অস্থায়ী কলোনি থেকে স্বেচ্ছায় নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিল ১৯ পরিবার। সরকারি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করলেও স্মার্ট সিটি প্রকল্পের অংশ হিসাবে নদীর বাধ নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
শনিবার ভোর ৪টা ৪৫ মিনিট নাগাদ পৌর নিগম, এসডিএম, তহশিলদার ও পুলিশের উপস্থিতিতে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। আশ্চর্যের বিষয়, এখানে কোনো উত্তেজনা বা সংঘর্ষ দেখা যায়নি। বরং পরিবারগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণ ও শান্তিপূর্ণ মনোভাব প্রশাসনকেও আশ্চর্য করেছে। পৌর নিগমের কর্মীরাও হাতে হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করেছেন এই প্রক্রিয়ায়।
একজন বাসিন্দা জানান, “আমরা জানি এই জমি সরকারি। তাই আইন মেনেই নিজেরাই ঘর ভাঙলাম। শুধু চাই সরকার আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিক।”
বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার বিধায়ক তথা আগরতলার মেয়র। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা দ্রুত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় কাউন্সিলার নিতু দে গুহ নিয়মিত তাঁদের পাশে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিবারগুলি। জনপ্রতিনিধিদের এই মানবিক ভূমিকা তাঁদের আশাবাদী করেছে যে অচিরেই স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে।
উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির মধ্যে ছোট শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও তাঁরা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। জেলা শাসক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে তাঁদের অনুরোধ— নতুন আশ্রয়ের ব্যবস্থা হলে জীবনকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারবেন।
এদিনের অভিযান প্রমাণ করল, আইন মেনে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার পথ বেছে নিলে সংঘর্ষ নয়, বরং সমাধানের দিকেই এগোনো সম্ভব। দক্ষিণ জয়পুরের এই ১৯ পরিবার তাই নজির স্থাপন করল শান্তিপূর্ণ উচ্ছেদ অভিযানে।