Tripura Belonia News : সভ্যতার চরম শিখরে দাঁড়িয়ে আজো সমাজে যৌতুক এর কারণে প্রাণ হারাচ্ছে বৌ। যেখানে যৌতুক দেওয়া ও নেওয়া দুটোই সমান অপরাধ বলে দেশে আইন প্রনয়ন রয়েছে সেখানে কিছু হিংস্র লোক আজো আইনের ভয় ভীতি কে উপেক্ষা করে যৌতুক এর জন্যে গার্হস্থ হিংসা বজায় রাখছে। আর তাতে অকালে অসময়ে প্রাণ হারাচ্ছে ঘরের বধূরা।
এমনই এক নৃশংস ঘটনার সাক্ষী রইলো ত্রিপুরা বাসী। শনিবার বিলোনিয়া থেকে উঠে এলো এই চাঞ্চল্য কর খবর। ১৩ থেকে ১৪ মাস আগে বিলোনিয়া ডিমাতলি এলাকার রাকেশ দেবনাথ এর সাথে পূজা দেবনাথ নামের এক মেয়ের সামাজিক রীতি নীতি মেনে বিয়ে দেয় মেয়ের পরিবার। বিয়েতে জামাই কে সোনার আংটি দেবার কথা ছিল। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তা দিতে পারেন নি মেয়ের বাবা। সেই থেকেই অশান্তির শুরু ।
বিয়ের পর থেকেই গৃহবধূ পূজার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতো স্বামী রাকেশ সহ তার শ্বশুর শাশুড়ি। এই নিয়ে বাপের বাড়িতে দু দুবার চলে যায় পূজা। কিন্তু মা বাবা বুঝিয়ে সুনিয়ে মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যায়।
ইদানিং এই অত্যাচার আরও চরম অবস্থায় গিয়ে পৌছায়। কিন্তু মেয়ে এবার আর বাবা মা কে কিছু জানায় নি। অবশেষে শুক্রবার স্বামী রাকেশ ও শ্বশুর শাশুড়ির হাতে অগ্নি দগ্ধ হয় পূজা। অভিযোগ তার গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে তাকে আধ্মরা অবস্থায় ফেলে রাখে ঐ পাষণ্ড মানুষ গুলো। এর পর আচমকা কি মনে করে স্বামী রাকেশ তার স্ত্রীর দেহের আগুন নেভাতে যায়। কিন্তু তাতে তার গায়ের কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। ওদিকে নিস্তেজ হয়ে পরে পূজা।
এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বিলোনিয়া রাধানগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ছুটে আসে মা বাবা। এর পর তার অবস্থা বেগতিক হওয়ায় তাকে প্রথমে শান্তিরবাজার ও পরে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। জিবিতে বাবা মা কে সব ঘটনা জানায় মেয়ে পূজা। আর তার পরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলে সে। সাংবাদিক দের সামনে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন মেয়ের বাবা।
ওদিকে স্বামী রাকেশ ও জিবি তে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। তবে মেয়ের মৃত্যুর জন্যে দায়ী রাকেশ দেবনাথ ও তার বাবা মা র বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করা সহ তাদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাবেন বলে জানিয়েছেন পূজার পিতা।
সভ্য সমাজে আজো যৌতুক এর মতো দাবীতে গৃহবধূর প্রাণ নাশ এক প্রকার লজ্জা জনক ঘটনার পাশপাশি নিন্দনিয় বিষয় ও বটে।