Amra Bangali Relly : প্রবল ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের রাস্তায় নেমে এলেন “আমরা বাঙালি” সংগঠনের শতাধিক সদস্য ও সমর্থক। মূল দাবি— বাঙালিদের ওপর চলতে থাকা অপমান ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হওয়া।
গত কয়েক মাস ধরেই উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের “অবৈধ অনুপ্রবেশকারী” বা “বাংলাদেশি” বলে চিহ্নিত করে নানা মহল অপমানিত করছে বলে অভিযোগ তুলছে সংগঠনটি। সেই প্রতিবাদকেই শনিবার বৃহৎ আকারে প্রকাশ করতে শহর আগরতলায় আয়োজন করা হয় এক বিক্ষোভ মিছিলের।
মিছিলটি শুরু হয় “আমরা বাঙালি”-র রাজ্য কার্যালয় থেকে। ঝড়-বৃষ্টির তোয়াক্কা না করেই হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নামেন সদস্যরা। স্লোগানে মুখরিত হয় আগরতলার রাস্তাঘাট। শেষ পর্যন্ত মিছিলটি গিয়ে পৌঁছায় ওরিয়েন্ট চৌমুহনী এলাকায়, যেখানে একটি সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপালসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বক্তব্য রাখতে গিয়ে রুদ্রপাল বলেন,
“আজকের এই বিক্ষোভ শুধু প্রতিবাদ নয়, বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। দেশের ভেতরেই যখন সংবিধান স্বীকৃত ভাষাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করা হচ্ছে, তখন আমাদের আর চুপ করে থাকার উপায় নেই।
তিনি আরও দাবি জানান, বাঙালিদের সাংবিধানিক অধিকার ও সম্মান রক্ষার্থে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, “আমরা বাঙালি” সংগঠন বহুদিন ধরেই ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সংগঠনের দাবি, ত্রিপুরার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জনসংখ্যার বড় অংশের সঙ্গে বাঙালি সমাজ গভীরভাবে যুক্ত। তবু সময়-সময় এই জনগোষ্ঠীকে বহিরাগত বা অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা অমানবিক ও অপমানজনক।
শনিবারের এই মিছিলে উপস্থিত জনতার উত্তেজনা ও আবেগে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, বিষয়টি আর কেবল রাজনৈতিক দাবিদাওয়া নয়, বরং এটি এখন বাঙালি পরিচয় ও অস্তিত্বের প্রশ্নে পরিণত হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মিছিলে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে বিষয়টি সাধারণ বাঙালি মানুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। আগামী দিনে এই আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার নেবে কিনা, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যবাসী।