Tripura Irregular Employees : ত্রিপুরা অনিয়মিত কর্মচারী মঞ্চের স্বাস্থ্য বিভাগীয় ইউনিটের প্রথম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় আজ । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মনসহ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা।
সম্মেলনে অনিয়মিত কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগে, গত ৪ঠা জুলাই মঞ্চের পক্ষ থেকে এক বিশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার সঙ্গে প্রতিনিধিদের বৈঠকে বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে— সব অনিয়মিত কর্মচারীর নিয়মিতকরণ, অবসরপ্রাপ্তদের এককালীন দশ লক্ষ টাকা প্রদান, এবং ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নিয়মিতকরণের স্কিম চালু করা।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি-দাওয়া বিবেচনার আশ্বাস দিলেও, আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন সম্মেলনে স্পষ্ট জানান, যদি সরকারের তরফ থেকে দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা না যায়, তবে নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন তারা।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় ৩০-৩২ হাজার কর্মচারী বহু বছর ধরে অনিয়মিত অবস্থায় কাজ করছেন। ২০০৬-০৭ সালে রাজ্য বিধানসভায় নিয়মিতকরণের সিদ্ধান্ত হলেও বহুজন এখনও সেই সুযোগ পাননি। ২০১৮ সালে এই প্রক্রিয়া স্থগিত হয়, এবং আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য কোনো নতুন নীতি ঘোষিত হয়নি।
কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী ‘সমকাজে সমবেতন’ পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা মিলছে না। ন্যূনতম মজুরি এতটাই কম যে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, নিয়মিতকরণের সরকারি স্কিম না থাকায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।
৭ বছর ধরে কোনো অনিয়মিত কর্মচারীকে নিয়মিত করা হয়নি—যা ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির ঘোষিত প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিযোগ তুলেছেন মঞ্চের নেতারা।
ত্রিপুরায় অনিয়মিত কর্মচারীদের সমস্যা শুধু কর্মসংস্থান নয়, এটি এক দীর্ঘস্থায়ী সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিচ্ছবি। বহু বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কার্যকর সমাধান না হওয়ায় হাজারো কর্মচারী আজ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না এলে, আগামী মাসগুলোতে ত্রিপুরা আবারও এক বৃহত্তর আন্দোলনের সাক্ষী হতে পারে।