Tripura Crime News : আগরতলা শহরতলির চন্দ্রপুর ইছামোয়া এলাকায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর এবং দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে গেছে, যা গোটা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ও উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি করেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটে, যেখানে একা ঘুমিয়ে থাকা এক গৃহবধূকে ছুরিকাহত করে ঘরে ঢুকে পড়ে মুখ বাঁধা দুই দুষ্কৃতী। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই তারা ঘরের সমস্ত কিছু তছনছ করে ফেলে এবং কিছু স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে জানা গেছে, ওই এলাকার বাসিন্দা মলিনা ঘোষ জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রতিদিনের মতো তিনি এবং তাঁর স্বামী বাড়ির একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। বাড়ির নতুন ঘরে একা ঘুমোচ্ছিলেন তাঁদের ছোট পুত্রবধূ। পরিবারের দুই ছেলে খারচি পুজোর ছুটিতে বাইরে বেড়াতে গিয়েছিল। ফলে তারা বাড়িতে ফিরতে দেরি করবে জানিয়ে পুত্রবধূ রাতের বেলায় একাই ঘুমিয়ে পড়েন।
রাত প্রায় একটার সময় হঠাৎ দরজায় আওয়াজ পান গৃহবধূ। ভেবেছিলেন তাঁর স্বামী ফিরেছেন। তাই দরজা খুলতেই ঘটে বিপত্তি। মুখ বাঁধা অবস্থায় দুই দুষ্কৃতী হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে ধারালো ছুরি ছিল। তারা গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে বলে, “যা কিছু আছে, সব বের করে দাও।” গৃহবধূ ভয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করলে বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেই তাঁকে ছুরি দিয়ে দু’হাতে কেটে রক্তাক্ত করে দেয় তারা।
ঘটনার পর, মলিনা ঘোষ জানান যে কিছুদিন আগেই তাঁরা বেড়াতে গিয়েছিলেন, তাই বাড়ির অধিকাংশ সোনার গয়না আগে থেকেই গৃহবধূর বাপের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। ফলে বাড়িতে চোরের দল খুব বেশি কিছু পায়নি। তবুও তারা ঘরের সমস্ত আলমারি, ট্রাঙ্ক, ওয়ারড্রোব ইত্যাদি উল্টে-পাল্টে ফেলে। অবশেষে কিছু ছোটখাটো স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চোরেরা মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে পালিয়ে যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। এলাকা জুড়ে নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তবে শহরতলী অঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা বাসিন্দাদের মধ্যে প্রবল নিরাপত্তাহীনতার অনুভব তৈরি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, এই চুরির ঘটনাটি নিছক একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং একটি বড় চক্রের ইঙ্গিতও হতে পারে। গভীর রাতে এভাবে বাড়িতে ঢুকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করা এবং সম্পত্তি লুট করে পালানো অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
জানা গেছে, আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে, সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
শহরতলির এই শান্ত এলাকায় বারংবার এ ধরনের ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। নিয়মিত টহল, রাত্রিকালীন নজরদারি এবং পুলিশের উপস্থিতি আরও সক্রিয় করা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চন্দ্রপুর সহ আশেপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।