Sabroom CITU News : কেন্দ্রীয় সরকারের প্রণীত চারটি শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে সারা ভারত জুড়ে শনিবার গণ অবস্থান কর্মসূচিতে শামিল হয় ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (সিটু)। রাজ্য, জেলা ও মহকুমা স্তরে একযোগে শ্রম দপ্তরের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই সর্বভারতীয় আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম মহকুমা শ্রম দপ্তরের সামনেও আয়োজিত হয় দুই ঘণ্টার গণ অবস্থান।
সিটু সাব্রুম বিভাগীয় কমিটির ডাকে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতৃত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষ অংশ নেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মসূচির সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হলেও শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়। ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই এই গণ অবস্থান চলে।
গণ অবস্থান চলাকালীন সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখেন সিটু রাজ্য কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিপ্লব সান্যাল। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে চারটি শ্রম কোড সংসদে পাশ করিয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির ধারাবাহিক আন্দোলন ও সর্বভারতীয় ধর্মঘটের ফলে এতদিন এই কোডগুলি কার্যকর করতে সরকার পিছিয়ে ছিল। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে, এই চারটি শ্রম কোড সারা দেশে কার্যকর করা হবে।
বিপ্লব সান্যালের দাবি, শ্রম কোড কার্যকর হলে ব্রিটিশ আমল থেকে দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে শ্রমিকরা যে ২৯টি শ্রম আইন আদায় করেছিলেন, সেগুলি কার্যত বাতিল হয়ে যাবে। মজুরি সংক্রান্ত চারটি আইন একত্রিত করে শ্রম কোড করা হয়েছে, যার ফলে মজুরি নির্ধারণে শ্রমিকদের দর কষাকষির অধিকার নষ্ট হবে। মালিকপক্ষ যা ঘোষণা করবে, শ্রমিকদের তা মেনে নিতে বাধ্য করা হবে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন শ্রম কোডে আট ঘণ্টা কাজের অধিকার লুপ্ত হয়ে বারো ঘণ্টা কাজের চাপ তৈরি হবে। পাশাপাশি পেশাগত নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা এবং শ্রমিকদের অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থিতিকে তিনি শ্রমিকদের জন্য ‘দাস ব্যবস্থার’ সঙ্গে তুলনা করেন এবং বলেন, শ্রমিকদের শ্রমশক্তিকে বাজারনির্ভর ব্যবস্থায় পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে।
সিটু নেতৃত্বের মতে, এই শ্রম কোড মূলত কর্পোরেট পুঁজির স্বার্থরক্ষার জন্য প্রণীত। আদানি-আম্বানির মতো বড় কর্পোরেট গোষ্ঠীর মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রমিকদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। অবিলম্বে শ্রম কোড বাতিল না হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর ও কঠোর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সিটু নেতৃত্ব।
এই গণ অবস্থানের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে শ্রম কোড প্রত্যাহারের জোরালো বার্তা পৌঁছে দেওয়াই ছিল কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।



