Bishalgarh News : ত্রিপুরার বিশালগড় বিধানসভা কেন্দ্রের দক্ষিণ ব্রজপুর এলাকা থেকে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। নিজের ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ন্যায় বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতি। অভিযোগ, সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে গিয়ে ছেলে ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন বৃদ্ধ বাবা-মায়ের উপর।
আক্রান্ত বৃদ্ধের নাম শিবচরণ লস্কর। তিনি দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর সিপিআই(এম) দলের কর্মী ছিলেন এবং স্থানীয় উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্বও পালন করেছেন বলে জানা গেছে। তাঁর স্ত্রী সহ বর্তমানে দু’জনেই ঘরছাড়া অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অভিযুক্ত ছেলের নাম পিন্টু লস্কর এবং পুত্রবধূর নাম শর্মিষ্ঠা।
বৃদ্ধ দম্পতির অভিযোগ, ছেলে ও তার স্ত্রী একযোগে তাঁদের মারধর করছে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে এবং বাড়ি ও জমিজমা নিজেদের নামে করে দেওয়ার জন্য নিয়মিত চাপ দিচ্ছে। এই নির্যাতনের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা। বাধ্য হয়ে গত কয়েকদিন ধরে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে।
এই বিষয়ে বিশালগড় থানায় মোট চারবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোনো সমাধান মেলেনি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, স্থানীয় পঞ্চায়েতেও বিষয়টি জানানো হলেও অভিযুক্ত পিন্টু লস্কর ও তার স্ত্রীর প্রভাব-প্রতিপত্তির সামনে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে দাবি করেছেন বৃদ্ধ দম্পতি।
অভিযোগ আরও গুরুতর হয়ে ওঠে যখন শিবচরণ লস্কর জানান, পুলিশের পক্ষ থেকেও তাঁরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পরও আজ বিপদের দিনে শাসক দল পরিচালিত পঞ্চায়েত কিংবা প্রশাসনের তরফে কোনও সহযোগিতা মিলছে না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
এই ঘটনার পর স্থানীয় মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন ও শাসক দল পরিচালিত পঞ্চায়েত আদৌ এই বৃদ্ধ দম্পতিকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় কি না।
এই ঘটনা সমাজে বৃদ্ধ মানুষদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে ধরছে। নিজের সন্তানের হাতেই যখন বাবা-মাকে ঘরছাড়া হতে হয়, তখন তা প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকটিও স্পষ্ট করে দেয়।
একাধিকবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও যদি বৃদ্ধ দম্পতি ন্যায় বিচার না পান, তবে তা আইন ও শাসনব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে। এখন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার, যাতে ভবিষ্যতে কোনো বৃদ্ধ বাবা-মাকে এমন দুর্দশার মুখে পড়তে না হয়।



