Bikash Debbarma : আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের প্রাঙ্গণে ভারতীয় জনতা পার্টির জনজাতি মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় ত্রিপুরার মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সভায় প্রদত্ত ওই বক্তব্যের ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতা জিতেন চৌধুরী।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে জিতেন চৌধুরী বলেন, ত্রিপরা মোথার সাম্প্রতিক কিছু কার্যকলাপ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সেসব নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। কিন্তু মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা একজন ভদ্রলোক তো বটেই, একজন সংবিধানের শপথ নেওয়া মন্ত্রীর ভাষা হতে পারে না। তাঁর মতে, এই বক্তব্য “গুন্ডামি ভাষা” ছাড়া আর কিছু নয়।
জিতেন চৌধুরী আরও অভিযোগ করেন, ওই সভামঞ্চে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি, সাংসদ এবং একাধিক মন্ত্রিসভার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এই ধরনের উস্কানিমূলক ও হিংসাত্মক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাঁর দাবি, মন্ত্রীর বক্তৃতায় সরকারের কোনও জনমুখী কর্মসূচি বা জনজাতি মোর্চার নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি। বরং প্রতিশোধ নেওয়া, “ছাই করে ফেলা” এবং ককবরক ভাষায় আক্রমণাত্মক শব্দ ব্যবহার করে হিংসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বক্তব্য সরাসরি একটি কগনিজেবল অপরাধের আওতায় পড়ে। তাঁর দাবি, অবিলম্বে মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি, সভাস্থলে উপস্থিত পুলিশ আধিকারিকদের ভাইরাল ভিডিও খতিয়ে দেখে নতুন ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করার কথাও তিনি বলেন।
সার্বিকভাবে দেখা গেলে, মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার বক্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক শালীনতার সীমা অতিক্রম করেনি, বরং তা রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও সাংবিধানিক মূল্যবোধের জন্যও গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সাংবিধানিক পদাধিকারীর মুখে হিংসাত্মক ও উস্কানিমূলক ভাষা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিতেন চৌধুরীর তোলা বরখাস্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার ও প্রশাসন কতটা দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং রাজ্যে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় কতটা দৃঢ় ভূমিকা পালন করে।



