Tripura Santirbazar News : শান্তির বাজার মহকুমার অন্তর্গত মুহুড়ীপুর বাজারে গতকাল গভীর রাতে ঘটে যায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। হঠাৎ ছড়িয়ে পড়া আগুন মুহূর্তের মধ্যেই প্রায় ছয়টি বসতঘর ও একটি রেশন দোকান পুড়িয়ে দেয়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বিধ্বস্ত পরিবারগুলোর প্রতি জরুরি সহায়তার দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ইতোমধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাজারের একটি রেশন দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। দোকানে আগুন লাগার পর তা দমে যাওয়ার আগেই আশপাশের টিনঘরগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পৌঁছাতেই স্থানীয়রা জোলাইবাড়ী দমকলবাহিনীকে ফোন করেন এবং নিজেরা জোট বেঁধে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন। তবে অভিযোগ উঠেছে—দমকল বাহিনীর সদস্যরা যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দমকল কর্মীরা সময়মতো উপস্থিত হলে ক্ষয়ক্ষতি এতটা বাড়ত না। শুধু রেশন দোকানটিই হয়তো পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতো, কিন্তু অন্যান্য ঘরবাড়ি রক্ষা করা সম্ভব ছিল। আরও অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছানো দমকলের গাড়িতে যথেষ্ট পরিমাণ পানি ছিল না এবং জেনারেটরেও নাকি তেলের ঘাটতি ছিল। এসব কারণে আগুন নিভানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হয়।
এতে আরও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে, কারণ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন—ঘটনার সময় দমকল সদস্যরা দায়িত্বহীন আচরণ করেন এবং কেউ কেউ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সাহায্যের দাবি জানালে দমকল কর্মীদের মধ্যে কয়েকজন তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও গালিগালাজ করেন।
তবে পরে পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠায় ঋষ্যমুখ বিলোনিয়া, সাব্রুম ও শান্তির বাজারের অতিরিক্ত দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। পাশাপাশি নবম বাহিনী টি এস আর জোয়ানও উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আগুনের পূর্ণাঙ্গ কারণ ও মোট ক্ষতির অঙ্ক এখনো চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা যায়নি।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছে। তাই তাদের জন্য দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে স্থানীয়রা প্রশাসনের প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মুহুড়ীপুর বাজারের অগ্নিকাণ্ড স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে প্রচণ্ড আঘাত এনে দিয়েছে। আগুনে একাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং তাদের পুনর্বাসন এখন জরুরি প্রয়োজন। ঘটনাটিতে দমকল বাহিনীর উদাসীনতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা দ্রুত তদন্ত করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে দ্রুত সহায়তা প্রদানের দাবি স্থানীয়দের মধ্যে জোরালো হয়ে উঠেছে, এবং প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে সবাই।



