MLA Ramu Das : প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রজুড়ে বামপন্থী বিধায়ক রামু দাসের করা উন্নয়নমূলক কাজকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক ভাবে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উঠল স্থানীয় শাসক দলীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিধায়কের উদ্যোগে সম্পন্ন হওয়া বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণ কাজের পর সরকারি নিয়মে বসানো ফলকগুলো রাতের অন্ধকারে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে কিছু অসামাজিক উপাদান।
রামু দাস জানান, লোকনাথ পাড়া, ঘোষ পাড়া, সুকান্ত পল্লি, জগন্নাথ মন্দিরমুখী সংযোগ রাস্তা সহ বেশ কিছু এলাকায় দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর করতে তিনি রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজ করিয়েছেন। এই কাজগুলো শেষ হওয়ার পর সরকারি প্রটোকল অনুযায়ী তাঁর নামাঙ্কিত ফলক স্থাপন করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, ফলক বসানোর কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
বিধায়কের কথায়, কাজের সময় থেকেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বাধা আসছিল ঠিকাদারের কাছে ‘কাটমানি’ দাবির মাধ্যমে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ তাঁর। তবুও কাজ শেষ করা হলে ফলকের উপর হামলা চালানো হয়—দিনে কিংবা গভীর রাতে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন রাস্তার ফলকটি বিহার নির্বাচনের ফল ঘোষণার রাতেই ভেঙে দেওয়া হয়। একইভাবে আরালিয়া সুকান্ত কলোনির ১০৫ মিটারের পাকা রাস্তার ফলকও সম্প্রতি নষ্ট করা হয়েছে। এমনকি লোকনাথ এলাকার কবরস্থানমুখী রাস্তার ফলকও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে বলে জানালেন বিধায়ক।
রামু দাসের দাবি, বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তাঁর নাম এলাকায় দেখতে না চাওয়াই এই অন্তর্ঘাতের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, “আমরা মানুষের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। মানুষের জন্য কাজ করি। কিন্তু শাসক দলের একদল দুষ্কৃতী আমাদের কাজকে বাধা দিচ্ছে, কর্মীদেরকে হুমকি দিচ্ছে, এবং ইচ্ছে করে ফলক ভেঙে নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
বিধায়ক জানান, এলাকার সাধারণ মানুষ তাঁর কাজকর্মে সন্তুষ্ট এবং তাঁকে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা জানিয়ে সহায়তা চান। সেই আস্থাকেই আঘাত করতে এই ধরনের ধারাবাহিক নাশকতা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুষ্কৃতীদের সাহস আরও বেড়ে যাচ্ছে।
শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজ্যের মানুষ এই ধরনের হামলা, সন্ত্রাস এবং উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার রাজনীতি কোনওভাবেই মেনে নেবে না।
প্রতাপগড়ে উন্নয়নমূলক কাজকে কেন্দ্র করে ফলক ভাঙচুরের এই ধারাবাহিক অভিযোগ রাজনৈতিক অশান্তি ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। বামপন্থী বিধায়ক রামু দাস দাবি করেছেন, বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর নাম সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অন্তর্ঘাত চালানো হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের সমর্থন ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি তাঁদের সন্তুষ্টি থাকা সত্ত্বেও, শাসক দলীয় দুষ্কৃতীদের বাধা—এমন অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দিকেই ইঙ্গিত করে।
প্রশাসন যদি দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশও প্রশ্নের মুখে পড়বে—এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।



