খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Sunday, 21 December 2025 - 12:02 AM
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

Jail Prisoners Recruitment : থালা হাতে পথে বেকার যুবসমাজ! ত্রিপুরায় জেল পুলিশ নিয়োগে ক্ষোভ চরমে

Jail Prisoners Recruitment
1 minute read

Jail Prisoners Recruitment : ত্রিপুরার দীর্ঘদিনের বেকারত্ব সমস্যা আবারও শিরোনামে। জেল পুলিশ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে চার বছরের অপেক্ষার পর ক্ষুব্ধ চাকরি–প্রত্যাশীরা বুধবার অনন্য প্রতিবাদের পথে হাঁটলেন। ভাতের খালি থালা হাতে, ফ্লেক্স নিয়ে তারা পৌঁছে যান আগরতলার কারা দপ্তরের সামনে। দাবি একটাই প্রতিশ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা হোক।

২০১৯–২২ সাল জুড়ে রাজ্যে একাধিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও বাস্তবে নিয়োগের সংখ্যা ছিল নিতান্তই সামান্য—এমনই অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তাদের দাবি, সরকার বড় বড় অনুষ্ঠান, উৎসব ও মনোরঞ্জনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও হাজার হাজার বেকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীন। জেল ওয়ার্ডার বা জেল পুলিশ পদে নিয়োগ তার বড় উদাহরণ।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালে ফিজিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ২৪৯ জন প্রার্থীর নিয়োগ আজও ঝুলে আছে। চার বছর ধরে একাধিকবার ‘আজ–কাল ঘোষণা হবে’ আশ্বাস দেওয়া ছাড়া সরকারের কাছ থেকে কার্যত কোনো সাড়াই পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে ২০২২ সালের জেল পুলিশ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর প্রায় ১২ হাজার প্রার্থী শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও এখনও পর্যন্ত রিটেন বা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি, ফলে পুরো প্রক্রিয়াই অচল হয়ে রয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এতদিন তারা শান্তিপূর্ণভাবে স্মারকলিপি ও ডেপুটেশন দিয়েছেন। কিন্তু ফল না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই প্রতীকী প্রতিবাদে নামতে হয়েছে। তাদের বক্তব্য, “অন্যান্য রাজ্যে নিয়মিত নিয়োগ হলেও ত্রিপুরায় বছরের পর বছর ধরে চাকরির আশা দেখিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।”

চাকরিপ্রার্থীরা বিশেষভাবে কারা মন্ত্রী শান্তনা চাকমা ও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, রাজ্যের তরুণ সমাজকে এই দীর্ঘ অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে অবিলম্বে রিটেন ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হোক। তাদের মতে, বেকারত্বের কঠোর বাস্তবতা আড়ালে ঢাকা যায় না কিছু প্রতীকী অফার লেটার বিলি করে বা সরকারের প্রচারমুখী বক্তব্যে—মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন গল্প বলে।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে পরিষ্কার—তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন, যতদিন না সঠিক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়।

ত্রিপুরার বেকারত্ব সমস্যা আজ শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, রাজ্যের তরুণ সমাজের মানসিক চাপ, অনিশ্চয়তা ও হতাশার প্রতিদিনের বাস্তবতা। বছরের পর বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে থাকা, পরীক্ষার পরও শেষ না হওয়া ফলাফল, এবং প্রতিশ্রুতি–নির্ভর প্রশাসনিক আচরণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সরকার মাঝে মাঝে অল্প সংখ্যক নিয়োগপত্র দিয়ে উন্নতির দাবি করলেও প্রকৃত অর্থে একটি স্থায়ী ও স্বচ্ছ নিয়োগনীতি এখনও দৃশ্যমান নয়।

রাজ্যের উন্নয়ন তখনই অর্থবহ হবে, যখন বেকার যুবক–যুবতীদের দক্ষতা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। স্বচ্ছ, সময়নিষ্ঠ এবং দায়িত্বশীল নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই ত্রিপুরার তরুণ সমাজের হারানো আস্থা ফিরে আসবে। বেকারত্বের মতো গভীর সামাজিক সমস্যার সমাধান কেবল প্রতিশ্রুতিতে নয়—কার্যকর পদক্ষেপেই সম্ভব।

For All Latest Updates

ভিডিও