খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Thursday, 27 November 2025 - 01:36 AM
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ - ০১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

Sudip Roy Barman : ত্রিপুরায় শূন্যপদ নিয়ে সরকারের নীরবতায় ক্ষুব্ধ বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন

Sudip Roy Barman
1 minute read

Sudip Roy Barman : ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন রাজ্যের সরকারি শূন্যপদ পূরণের ক্ষেত্রে সরকারের চরম গাফিলতি এবং বিলম্বের বিষয়ে তীব্র অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, রাজ্যে প্রায় ৫২ হাজারেরও বেশি শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও সরকার মাত্র ৪০৭টি পদের জন্য ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে, যা রাজ্যের বিপুল সংখ্যক বেকার যুবসমাজের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়।

বিধায়ক জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় শহরকেন্দ্রিক প্রশ্নপত্রের কারণে গ্রামীণ এলাকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আগরতলার মতো আর্বান অঞ্চলে যেসব প্রতিষ্ঠান ভালো শিক্ষক ও ফ্যাকাল্টি দিতে পারে, সেই সুবিধা রুরাল কলেজগুলোতে নেই। ফলে একই প্রশ্নপত্রে প্রতিযোগিতা করলে রুরাল শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আগরতলা ও শহরকেন্দ্রিক প্রার্থীদের সুবিধা দিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি হচ্ছে, আর গ্রামীণ প্রার্থীরা পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না। এ কারণে একাধিক স্তরের প্রশ্নপত্র চালু করার দাবি জানান তিনি, যাতে প্রত্যেকে সমান সুযোগ পায়। তাঁর মতে, TPSC, JRBT বা অন্যান্য পরীক্ষাকর্তা সংস্থাগুলোর বিভিন্ন প্রশ্নপত্র তৈরি করা উচিত।

সুদীপ রায় বর্মন অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সরকার বিভিন্ন নিয়োগপদ ঘোষণার মাধ্যমে যুবকদের আশা দেখালেও আজ পর্যন্ত কোনও নোটিফিকেশন প্রকাশ করা হয়নি। ঘোষণা করা হয়েছিল ২১৬টি সাব-ইন্সপেক্টর পদ, ১০০টির বেশি তহসিলদার, ১০০টির বেশি আমিনদার, ১০৪টি অডিটর, ১৪০টি ফরেস্টার, ৩০টি কো-অপারেটিভ বিভাগের পদ, ২৪০টি এলডিসি পদসহ আরও বহু শূন্যপদ। কিন্তু ২০২৫ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত কোনও পদেরই নোটিফিকেশন বের হয়নি।

তিনি জানান, ঘোষণার ভিত্তিতে অনেক যুবক-যুবতী কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন, কয়েক মাস ধরে কোর্স করেছেন, অর্থ ব্যয় করেছেন। কিন্তু নোটিফিকেশন না আসায় তাঁদের প্রস্তুতি এবং অর্থ—দুটোই অপচয়ে পরিণত হয়েছে। তাঁর কথায়, সরকারের এমন আচরণ যুবসমাজের সঙ্গে প্রতারণা।

বিধায়ক জানান, ১৯ নভেম্বর ঘোষিত নতুন ৪০৭টি পদের ক্ষেত্রেও সরকার কোনও নোটিফিকেশন কবে প্রকাশ করবে তা স্পষ্ট করেনি। তাঁর অভিযোগ, ঘোষণা কাগজে থাকে, বাস্তব প্রয়োগ হয় না। এর ফলে যুবকদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং হতাশা বাড়ছে।

তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন যে, বেকার যুবকদের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতেই সরকার এসব অসম্পূর্ণ ঘোষণার আশ্রয় নিচ্ছে। তাঁর মতে, এ সবই শাসকদলের পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রচার, যেখানে কাজের চেয়ে দেখানোর ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সুদীপ রায় বর্মন বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং সময়মাফিক করতে হলে সরকারকে স্পষ্ট পরীক্ষা ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। কোন পরীক্ষার প্রিলিমিনারি, মেইন, ফাইনাল—সবই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। যেমন অন্যান্য রাজ্যে এবং কেন্দ্রে হয়, তেমনভাবে ত্রিপুরাতেও সময়বদ্ধ প্রক্রিয়া চালু করা প্রয়োজন।

বিধায়ক জানান, সরকারের এই ধীর সিদ্ধান্ত যুবকদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যুবকদের হতাশা বাড়লে তা পুরো সমাজের জন্য ক্ষতিকর। সরকারের প্রতি তাঁর আবেদন—দ্রুত নোটিফিকেশন প্রকাশ, রুরাল-আরবান বৈষম্য দূরীকরণ এবং জরুরি ভিত্তিতে সমস্ত শূন্যপদ পূরণের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

For All Latest Updates

ভিডিও