Womens College Agartala : রবিবার রাতের অস্বস্তিকর ঘটনার জেরে মহিলা কলেজ সংলগ্ন এসটি ওয়েলফেয়ার ডেন্টাল কলেজ মহিলা হোস্টেল এলাকায় নেমে এসেছে উদ্বেগের ছায়া। হোস্টেলের ভেতরে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের অবাধ প্রবেশ এবং পরবর্তী আচরণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম দুর্বলতাকে সামনে এনে দিয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার সময় ওই যুবক সরাসরি হোস্টেলের মূল ফটকে উপস্থিত হয়ে নিরাপত্তা প্রহরীকে জানায় যে, সে নাকি ভেতরে থাকা এক ‘বন্ধুর’ সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রহরী তাকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেয়। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে সে হোস্টেলের বিভিন্ন ব্লকের আশপাশে ঘোরাফেরা করতে থাকে। অভিযোগ, জানালার ফাঁক দিয়ে হোস্টেলে থাকা ছাত্রীরাও তাকে একাধিকবার উঁকিঝুঁকি দিতে দেখেছেন। এমনকি সে নাকি অশালীন ভাষায় গালাগালও করে।
ঘটনার আকস্মিকতায় আতঙ্কিত ছাত্রীরা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানান। তবে যখনই প্রহরীরা তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন, তখনই দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই যুবক। রাতেই মহিলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে।
সোমবার সকালেও একই ধরনের সন্দেহজনক উপস্থিতির খবর পেয়ে সাংবাদিক, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং হোস্টেল ওয়ার্ডেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ছাত্রীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরেই নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করে আসছেন। পুরো হোস্টেল চত্বরে মাত্র একটি সিসি ক্যামেরা থাকায় নজরদারি কার্যত অচল হয়ে আছে। পাশাপাশি প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়া নিয়ম না থাকা, প্রহরীদের অসচেতনতা—সব মিলিয়েই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
হোস্টেলে বসবাসকারী ছাত্রীদের মতে, এই ঘটনার পরে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রাতের অন্ধকারে অনায়াসে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারায় তারা নিজেদের আর সুরক্ষিত মনে করছেন না।
এ ঘটনার পর হোস্টেল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দিলেও ছাত্রীরা চান তৎক্ষণাৎ কার্যকর পদক্ষেপ। তারা মনে করছেন, সিসিটিভি বাড়ানো, প্রবেশপথে কঠোর নজরদারি এবং প্রহরীদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা—এই তিনটি বিষয় জরুরিভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এর আগে নিরাপত্তাহীনতার এই পরিস্থিতি সমাধান না হলে এমন ঘটনা আবার ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ছাত্রীরা।
হোস্টেলে অজ্ঞাত যুবকের প্রবেশ-ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা অবহেলার স্পষ্ট উদাহরণ। ছাত্রীরা যেভাবে আতঙ্ক ও অসুরক্ষার কথা জানিয়েছেন, তা দেখিয়ে দেয় যে অবিলম্বে নজরদারি ব্যবস্থা উন্নত করা ও নিরাপত্তা বিধি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি। যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু না করা হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদের সম্ভাবনা থেকেই যাবে। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা।



