Vast change in vaccination certificate
কোভিড ভ্যাক্সিন এর সংসাপত্র থেকে গায়েব প্রধানমন্ত্রীর ছবি। ভ্যাক্সিন নিয়ে বিদেশী কোম্পানি এস্ট্রাজেনেকার স্বীকারোক্তি তে কি তবে বেজায় চাপে ভারত সরকার ? নাকি ভ্যাক্সিন এর ক্ষতিকর প্রভাবের খোলসা হতেই পিছু হটছেন নরেন্দ্র মোদী।
কোভিশিল্ড, ভারতে করোনা নিরাময়ে সর্বাধিক ব্যবহৃত ভ্যাক্সিন। ২০২১ এর ১লা জানুয়ারি থেকে বিশ্ব জুড়ে কোভিশিল্ড ভ্যাক্সিনের ডোজ দেওয়া শুরু হয়। এই ভ্যাক্সিনের মাদার কপানি এস্ট্রাজেনেকা ইউনাইটেড কিংডম এর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এই ভ্যাক্সিন নির্মাণ করেছিল। কিন্তু ভাক্সিন গ্রহনের পর থেকেই বিভিন্ন মহলে ভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ভ্যাক্সিন গ্রহনের পর থেকে গ্রাহকদের মধ্যে থেকে শারীরিক নানাবিধ সমস্যা উপলব্ধির অভিযোগ উঠে আসে। বহু মানুষ দুর্বলতা অনুভব করেন বলেও দাবি করেন। এর পরই বিশেষজ্ঞ মহল থেকে নেওয়া হয় আইনি পদক্ষেপ।
কোভিশিল্ড এর নির্মাতা এস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা ও হয়েছে ব্রিটিশ কোর্টে। আর সেই মামলা চলেছে দীর্ঘ দুই বছরের ও অধিক সময় ধরে। তাঁর জেরেই গত রবিবার এস্ট্রাজেনেকা আদালতে স্বীকার করে নিয়েছে যে এই ভ্যাক্সিনের বেশ কিছু দুর্লভ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার মধ্যে একটি বিরল প্রজাতির রোগ টিটিএস হবার সম্ভাবনা প্রবল। যাতে একজন ব্যাক্তির দেহের রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, রক্তে প্লেটেলেটস কমে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর এতে করে কোনো ব্যাক্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার ও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সব কিছু প্রকাশ্যে আসতেই আমাদের ভারত বর্ষে নড়ে চড়ে বসেছেন খোদ দেশের বর্তমান সরকার ও । কেননা ভারতে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ এই কোভিশিল্ড ভাক্সিনের একটি নয় , বরং ডবল ডোজ নিয়েছেন। আর তাতে করে দেশের মানুষের সুরক্ষা নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন চিহ্ন লেগে গেছে।
এস্ট্রাজেনেকার স্বীকারোক্তির পরপর ই ভারতীয় অভিনেতা তথা পরিচালক ‘প্রকাশ রাজ’ তাঁর টুইটে (বর্তমান ‘এক্স’ হ্যান্ডেল) একটি পোস্ট করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি কে কটাক্ষের সুরে বলেন যে ভাক্সিন এর সংসাপত্র থেকে মুছে ফেলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। আর সেই নিয়েই তুমুল সমালোচনার মুখে বর্তমান ভারত সরকার।
এস্ট্রাজেনেকার স্বীকারোক্তি বেড়িয়ে আসতেই ব্যাপক চাপে পড়েছে মোদী সরকার। তাই গোটা বিষয় থেকে বিরত থাকার জন্যেই নরেন্দ্র মোদী জীর ছবি সরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
এই নিয়ে তুমুল গুঞ্জন চলছে বিভিন্ন মহলে।
কিন্তু এই অভিযোগ গুলিকেই কভার করে দেওয়া হল এবার অন্য পদ্ধতি তে। যেহেতু এই মুহূর্তে দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচন চলছে তাই ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’ কে মান্যতা দিতেই নাকি এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে এমনটাই। তবে অনেকেই মন্তব্য করছেন যে নির্বাচন এর নাম ভাঙ্গিয়ে আসল কারণ লুকিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার। কেননা নির্বাচন শুরু হয়েছে ১৯শে এপ্রিল। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি পোর্টাল গুলী থেকে এবং ভাক্সিন এর সংসাপত্রে ও ছবি সরানোর কাজ গত রবিবারের পরেই করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে বেশ কিছু সন্দেহ ও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তবে কি এটা স্পষ্ট নয় যে কোভিশিল্ড এর দায় এড়িয়ে যাবার জোর প্রচেষ্টা করছে মোদী সরকার ? একদিকে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে এমনিতেই চাপে ছিল দল। এর উপর আবার অভিযোগ রয়েছে ভ্যাক্সিন কে শুধু মাত্র ব্যবসা করার জন্যে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে মোদী জীর সরকার। মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে ভ্যাক্সিন নির্মাতা কোম্পানিগুলোর সাথে। মোদ্দা কথা, ১৪০ কোটি ভারত বাসীর জীবন নিয়ে বানিজ্য করার রাজনৈতিক পরিকল্পনা। এমনটাই বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচন আগামী মাসেই শেষ হয়ে যাবে। তবে ভ্যাক্সিন সংক্রান্ত এই বিবাদের বিষয়ে কি ব্যাখ্যা দেবেন মোদী জি , সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা মানব সমাজ।