Unakoti Disctrict Hospital : ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের সামনে প্রতিদিন ড্রেনের নোংরা জল, মল-মূত্র রাস্তায় বইছে—এ দৃশ্য এলাকায় নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ, রোগী ও তাঁদের পরিবার এই অস্বাস্থ্যকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। হাজার অভিযোগ সত্ত্বেও সরকারের প্রশাসন বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ এখন তুঙ্গে।
স্থানীয়দের পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ —সরকার “উন্নয়ন” বললেও বাস্তবে মানুষের মৌলিক প্রয়োজনকেই অবহেলা করা হচ্ছে। ভগবাননগর পঞ্চায়েত সদস্য আকমদ আলি জানান, ড্রেন সংস্কারের জন্য ৬৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে কিছুদিন আগে প্রচার করা হলেও মাঠে নামলে তার কোনও প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, “যদি টাকা বরাদ্দ থাকে, তবে কাজ কোথায়? আর যদি না থাকে, তবে মিথ্যা প্রচারের দায় কার?”
পানীয়জলের ট্যাঙ্ক ও মসজিদের পাশে নোংরা জল জমে থাকা নিয়ে স্থানীয়রা সরাসরি সরকারের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করছেন। তাঁদের দাবি, এই অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা, ন্যূনতম নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়নি।
অবস্থার অবনতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গতকাল রাত ১১টার দিকে চন্ডীপুর যুব কংগ্রেস ও স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে ড্রেজার এনে নোংরা পরিষ্কার করেন—যা সরকারের কাজ হওয়ার কথা। স্থানীয়দের মন্তব্য—“রাস্তা পরিষ্কার রাখা এখন বিরোধীদের করতে হচ্ছে! সরকার কোথায়?”
মানুষের আক্ষেপ—যে সরকারের প্রতিশ্রুতি ‘উন্নয়ন’ ও ‘স্বচ্ছতা’, বাস্তবে সেই সরকার হাসপাতালের দরজায় মল-মূত্রের স্রোতও থামাতে পারছে না। তাঁদের প্রশ্ন—
এটাই কি উন্নয়ন? নাকি এটা সরকারের ব্যর্থতার জ্বলন্ত প্রমাণ?
ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের সামনের নোংরা ড্রেন, রাস্তার ওপর মল-মূত্রের স্রোত, জনগণের অনিরাপদ যাতায়াত—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আজ ভয়াবহ। বহু অভিযোগ, বহু অনুরোধ সত্ত্বেও সরকারি প্রশাসনের নীরবতা শুধু হতাশাই নয়, দায়িত্বহীনতার এক নগ্ন চিত্রও সামনে আনে। ৬৫ লক্ষ টাকার বরাদ্দের দাবি সত্য হোক বা অসত্য—কাজ না হওয়ার দায় এড়াতে পারে না সরকারই।
যে হাসপাতাল জীবনের আশ্রয়, সেখানে পৌঁছাতে যদি মানুষকে নোংরা জল মাড়িয়ে হাঁটতে হয়, তবে তা উন্নয়নের নয়—ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতার পরিচয়। এখন প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ, স্বচ্ছ তদন্ত এবং স্থায়ী সমাধান।



