Udaipur CITU News : উদয়পুর মহকুমার বাগমা জোনে সিটুর বাড়ি–বাড়ি সদস্যপদ সংগ্রহ কর্মসূচি মঙ্গলবার ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সকাল সাড়ে আটটা থেকেই পশ্চিম খুপিলং, নলঢেপা ও পূর্ব বারভাইয়া এলাকায় চলেছে সংগঠনের সক্রিয় প্রচার অভিযান। শ্রমিক ও কৃষকদের উল্লেখযোগ্য অংশ এতে অংশগ্রহণ করেন। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিটুর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, রাজ্য সম্পাদক দিলীপ দত্ত, মহকুমা কমিটির সম্পাদক প্রদীপ সাহা, সভাপতি কুরপান খাদিমসহ সংগঠনের বহু নেতা।
নেতৃত্বের দাবি শ্রমিক–কৃষকের অধিকার আজ ভয়াবহভাবে আক্রান্ত। বর্তমান রাজ্য সরকারের নীতির ফলে কাজের অভাব, বেতনে স্থবিরতা এবং মূল্যবৃদ্ধির চাপ শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। তাই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বাড়ি–বাড়ি সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যই হল এই আন্দোলনকে জনভিত্তিক করা, যাতে শ্রমজীবী মানুষের সমস্যাকে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার হাত থেকে রক্ষা করা যায়।
সংগঠনের নেতাদের দাবি, রাজ্যে চাকরির সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাবার বাগানের দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন। শঙ্কর প্রসাদ দত্ত বলেন, “ত্রিপুরায় আজ শ্রমিকদের কাজ নেই, খাবার নেই। রাবার বাগান না থাকলে শ্রমিকদের উপোস করতে হত। রাজ্য সরকার যে শ্রমনীতির নামে প্রহসন চালাচ্ছে, তা মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, পশ্চিম খুপিলং গ্রাম পঞ্চায়েত ও নলঢেপা এলাকায় কৃষক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে সরকারের প্রতি মানুষের হতাশা তীব্র। এলাকাজুড়ে বেগুন, টমেটো, আলুসহ নানান সবজির চাষ হচ্ছে—কিন্তু কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রশাসন কার্যত অক্ষম। ফলে উৎপাদন বাড়লেও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কৃষক সংগঠন, ছাত্র ফেডারেশন ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের সদস্যরাও সিটুর এই কর্মসূচিকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, শ্রমসংক্রান্ত সমস্যা বা কৃষক স্বার্থ নিয়ে বিজেপি সরকার কেবল আশ্বাস দেয়, বাস্তবে কোনো সমাধান আনে না। নলঢেপা ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর মানুষ জানান, সিটুর ধারাবাহিক আন্দোলনই তাদের আশার জায়গা তৈরি করেছে।
সিটু নেতৃত্বের দাবি, সরকারের ভুল নীতি, অব্যবস্থাপনা ও দায়সারা মনোভাবের বিরুদ্ধে শ্রমিক–কৃষক আজ ঐক্যবদ্ধ। সদস্যপদ সংগ্রহ অভিযানে যে উত্সাহ দেখা গেছে, তা প্রমাণ করে—সরকার যখন মানুষের পাশে নেই, সংগঠন তখন তাদের সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে উঠছে।
উদয়পুর মহকুমায় সিটুর সদস্যপদ সংগ্রহ কর্মসূচিতে যে ব্যাপক সাড়া মিলেছে, তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজ্য সরকারের প্রতি মানুষের হতাশা আর ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। কাজের অভাব, ন্যায্যমূল্যের সংকট, শ্রমিক–কৃষকের নিরাপত্তাহীনতা ও নীতিগত অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আজ সাধারণ মানুষ সংগঠনের পাশে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারের দাবি–দাওয়ার প্রচার নয়, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সেই দায়িত্ব পালনে বর্তমান শাসকদল ব্যর্থ। তাই শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা এখন আন্দোলনের শক্তিতে যা সিটুর এই প্রচারাভিযান আরও দৃঢ় করে তুলছে।



